এএইচএম মান্নান মুন্না :: মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না- ভূপেন হাজারীকার কালজয়ী গান বাস্তবরূপ দিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোহাম্মদ কাজল। সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ, উদার মানসিকতায় সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে সাধারণ মানুষের অন্তরে স্থান করে নিয়েছেন মোহাম্মদ কাজল। কাজল নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের খাজা সুলতান আহাম্মদ এর বড় ছেলে।
মোহাম্মদ কাজল গ্র্যাজুয়েশন লাভ করার পর ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বসুরহাটে শতরূপা গার্মেন্টস ও খাজা বেকারী কর্ণধার ছিলেন। এ ব্যবসায়ী দু’যুগ পূর্বে আমেরিকা গিয়ে মেরীল্যান্ড শহরে সততা, দক্ষতা এবং কঠোর পরিশ্রমে প্রারম্ভিক থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ বডি অয়েল অ্যান্ড ভ্যারাইটি স্টোর, ফাতেমা মিনি মার্ট প্রতিষ্ঠানকে বৃহৎ ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তিনি বর্তমানে আমেরিকাতেও বৃহৎ ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। ব্যবসায়ীক জীবনে শত ব্যস্ততা থাকলেও মোহাম্মদ কাজল প্রাণের টানেই তাঁর জন্মভূমি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাকে ভুলতে পারেননি। দেশের কথা নিরন্তর ভাবেন। প্রতিনিয়ত তাঁর অন্তরে বসবাস করে নিরন্তর বাংলাদেশ। তিনি আত্মার উপলদ্ধি থেকে উপজেলার একটি অংশের অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন মানুষের কল্যাণে।
তিনি স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে এসে ঘুঘু ডাকা পল্লীর বুকে নানা কল্যাণকর কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে চলেছেন। মা-বাবার স্মৃতি রক্ষার্থে, এলাকার শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মোহাম্মদ কাজল প্রতিষ্ঠা করেন ‘আলহাজ সুলতান আনোয়ারা ফাউন্ডেশন’। এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি এলাকায় ব্যাপক জনহিতকর কাজ পরিচালনা করছেন। তিনি ২০০৬ সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত উপজেলার ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশের লক্ষে বৃত্তি পরিচালনা করে আসছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা বিকাশের প্রতিযোগিতার আবাহ সৃষ্টি করার সুযোগ লাভ করছে। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে এসব মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হবে।
মোহাম্মদ কাজল মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদানের পাশাপাশি এলাকার কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার আর্থিক দৈন্যতার কারণে বিবাহযোগ্য মেয়েদের বিয়ে দিতে পারেনা এমন পরিস্থিতিতে প্রতিজনকে নগদ ৫০হাজার টাকা করে সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছেন। মানসিক যন্ত্রণা থেকে নিবৃত্তি পাচ্ছেন এসব কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা। তারা দু’হাত তুলে দোয়া করছেন এ কোমল মনের অধিকারী, বিনয়ী, সৎ, নির্ভিক, সদালপী ও বন্ধুসুলভ আচারণকারী, আলহাজ্ব সুলতান আনোয়ারা ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান ও বসুরহাট একাডেমীর পরিচালক মোহাম্মদ কাজল’র জন্য। তিনি তাঁর উপার্জিত অর্থের এক অংশ দিয়ে বসুরহাট পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সীমান্তে কামলারপুল সংলগ্ন চরকাঁকড়া ২নং ওয়ার্ডে ২২শতাংশ জমি দান করে বায়তুল নাজাত জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
কাজল যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের দূর্যোগের সময় ভুলেননি নিজ এলাকার মানুষদের। কর্মহীন অসহায়, দিন মজুর পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন তৈলসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা’র হাতে নগদ ৫০হাজার টাকা তুলে দেন। পূর্বেও মানব কল্যাণে, শিক্ষায়, চিকিৎসায় গরীব স্বজন, মসজিদ, এতিমখানাসহ ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৫ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন।
মোহাম্মদ কাজল ব্যবসা পরিচালনার পাশা-পাশি আমেরিকা নিউজ মিডিয়া, আমেরিকা-বাংলার কো-ফাউন্ডার, আমেরিকার মেরীল্যান্ড ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামেলীর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি সমাজসেবা করেন প্রচারের জন্য নয়, আত্মার উপলদ্ধি থেকে, সমাজের উন্নয়নে কিংবা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তনে।
তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন মানবসেবায় অনুকরণীয় হয়ে থাকার দোয়া চান এলাকাবাসীর কাছে।