এএইচএম মান্নান মুন্না :
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার উল আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকি ও রেজিস্ট্রার জসীমউদ্দিন’র পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘স্টেপ ডাউন ভিসি’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়
বাসভবন ঘেরাও করে জুতা মিছিলও করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
রোববার( ১৮ আগষ্ট) বেলা ১১টা থেকে নোবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ভিসি, প্রোভিসি ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা আন্দোলন বিরোধী বিভিন্ন কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিগত সময় ঘটে আসা নানা অনিয়ম অনাচারের দরুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এসব বিষয় সামনে রেখে এবং বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দুর্নীতিবাজ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত এ তিন কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে তাদের নামের পদত্যাগপত্র লিখে নিজ নিজ ঠিকানায় পাঠানো হবে। একই সঙ্গে তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করাসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুমকি দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম বলেন, সাবকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তার দোসর নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকি ও রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছে। এর মধ্যে তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পরও পদত্যাগ করেনি। আমরা তাদের পদত্যাগের দাবিতে আজ ‘স্টেপ ডাউন ভিসি’ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে সাধারণ শিক্ষকরা। এতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করেছে তারা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন শিক্ষকরা।
বিবৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ।
এর আগে গত ১০ আগস্ট (শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুরসহ নয় প্রক্টর পদত্যাগ করেন। অন্যদিকে রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে ওএসডি করে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবুও এ রেজিস্ট্রারে পদত্যাগ নিশ্চিত করতে চান।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকি, রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পদত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এসব বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল বাকিকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।