কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বের জেরে সাবেক যুবদল নেতা এরশাদ মাঝিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা। নিহতের অপর তিন ভাইকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছ গ্রাম ঘাট এলাকায় (ডাকাতিয়া নদী) এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে চট্রগ্রাম নেয়ার পথে রাত ১০ টায় তার মৃত্যু হয়। নিহত এরশাদ’র ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর জন্য উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাঞ্ছুরুল হক বাবরের ক্যাডারদের দায়ী করেছে নিহতের পরিবার।
নিহত এরশাদ মাঝি চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামের রইছল হকের ছেলে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন এরশাদের ছোটভাই জহির উদ্দিন (৩৩), নিজাম উদ্দিন (২৮) ও ফরহাদ (২৪)। তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের আরেক ছোটভাই সামছুদ্দিন (৩০) জানান, সকালে গুচ্ছগ্রাম ঘাটে লিজ নেওয়া ভিটায় দোকানঘর নির্মাণ করতে যান এরশাদ মাঝি। এ সময় চাঁদা দাবির পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জলদস্যু নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য সমীর, জাবেদ, ওবায়েদ, জিয়া, সুজন, তারেকসহ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়।
নিহতের বাবা রইছল হক বলেন, হামলায় নিজাম ডাকাতের ছেলে সন্ত্রাসী সুজন আমার ছেলে এরশাদের পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। অপর আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার আরও তিন ছেলেকে জখম করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাঞ্ছুরুল হক বাবর বামনী নদী ও সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাছ ধরার প্রতিটি ট্রলার থেকে নিজাম ডাকাতের বাহিনী দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। নিহত এরশাদের মাছ ধরার ট্রলার থাকায় তার থেকেও ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে পাঁচ হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা না দেওয়ায় নিজাম ডাকাত ও তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়।
নিহতের ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন দাবি করেন, মুছাপুর বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান ও তার ছোটভাই মাঞ্ছুরুল হক বাবরের সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা না পেয়ে যুবদল নেতা এরশাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আসামিরা সবাই বাবর বাহিনীর সদস্য। তিনি (বাবর) এদের দিয়ে নদীতে চাঁদাবাজি করান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান ও তার ভাই মাঞ্ছুরুল হক বাবর নদীতে চাঁদাবাজি এবং হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে না পেরে উপজেলা বিএনপির এক নেতা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।