কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে গৃহবধূ কামরুন্নাহার পান্না হত্যায় স্বামী আমিরুল ইসলাম আমিরকে গ্রেফতার ও হয়রানির প্রতিবাদে এবং প্রকৃত খুনি গ্রেফতারের দাবীতে মা রহিমা খাতুনের সংবাদ সম্মেলন।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় উপজেলার চরপার্বতী ২নং ওয়ার্ডে তার নিজ বাড়ীতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রহিমা খাতুন লিখিত বক্তব্যে বলেন, বারো বছর আগে নুরুন্নাহার পান্নার সাথে আমার ছেলে আমিরুল ইসলাম আমিরের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের আবির (১০), অহনা (০৭) ও মোহনা (০৫) নামে তিন সন্তান রয়েছে। গত দুই-তিন বছর ধরে পার্শ্ববর্তী মৌলভী মখলেছের বাড়ী’র আবুল কালামের ছেলে বাবুল (২৮) পান্নাকে পরকিয়া প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিরক্ত করে এবং গত ১৯জুলাই তারিখে পান্নাকে নিয়ে বাবুল অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। তাকে খুঁজে না পেয়ে আমার ছেলে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। যাহার নং- ৭৪৬, তারিখ- ২৪/০৭/২০২০ইং। ফলে পান্না তার ভুল বুঝতে পেরে আমিরুলের সংসারে ফিরে আসে। সেটা বাবুল তা সহজে মেনে নিতে পারে নাই। এ নিয়ে বাবুল অনবরত পান্নাকে মেরে ফেলার হুমকি ধমক দিয়ে আসছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আমার ঘরের দক্ষিণে পুকুরের পাশে ডেকে নিয়ে পান্নাকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। পরে তার লাশ পুকুরে দেখতে পেয়ে আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ প্রকৃত খুনিকে গ্রেফতার না করে আমার নিরপরাধ ছেলেকে গ্রেফতার করে আর্থিক ও মানসিক হয়রানি করছে। আমার নাতি-নাতনির মা খুন হয়েছে, বাবা কারাগারে। বর্তমানে তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে। আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমার নিরপরাধ ছেলেকে অত্র মামলা হতে অব্যাহতি দিয়ে প্রকৃত খুনিকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
নিহত গৃহবধূর বড় ছেলে শিশু আবির (১০) বলেন, সন্ধ্যার পর আমি টেবিলে পড়ছিলাম। এ সময় আম্মুর মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। আম্মু মোবাইল রিসিভ করলে আমাদেরকে পাঁচ মিনিট পর আসি বলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। আমি মোবাইলে বাবুলের কণ্ঠ শুনতে পাই। এর কিছুক্ষণ আম্মুর একটি চিৎকার শুনি। বাড়ীর লোকজনসহ আম্মুকে খোঁজতে গেলে পুকুর পাড়ে রক্ত দেখতে পাই। পরে তাঁকে খোঁজাখুঁজির পর পুকুরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।
গৃহবধূ হত্যা মামলার বাদী তার পিতা জাফর উল্যাহ জানান, আমার জামাই নির্দোষ। আমি তাকে আসামী করি নাই। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত খুনির বিচার চাই।
চরপার্বতী ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম জানান, এ হত্যাকান্ডের সাথে যারা প্রকৃত দোষী তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক যেন শাস্তি হয় এবং যাতে করে এ শাস্তি দেখে যেন সমাজে এ ধরণের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এ ঘটনায় নিরপরাধ কোন ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়।