কোম্পানীগঞ্জে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে বিএনপির মত বিনিময়

Date:

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃদ্বয়ের সাথে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ১১ ঘটিকায় বসুরহাট নির্জন কনভেনশন হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মত বিনিময়কালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার বলেন,আমরা রাজনৈতিকভাবে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছি কিন্তু ভাঙচুরের যে ঘটনা গুলো ঘটেছে মূলত সেটি করেছে জনতা। আপনাদের সাংবাদিকদের কাছে ছবি আছে আওয়ামী লীগ অফিস আমরা আগুন দিই নাই, আমাদের নেতারা আসার আগে বিক্ষিপ্ত জনতা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এটি গত ১৭ বছরে নির্যাতিত বঞ্চিত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। ওবায়দুল কাদের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা আমরা জানিও না, কারা জ্বালাও পোড়াও করেছে। তাদের বাড়ি পাহারা দেওয়া ও রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব না। আমারা যেটি দায়িত্ব পালন করেছি আপনারা সাংবাদিকরা অবশ্যই দেখেছেন সরকারি ভবন,সরকারী অফিস রক্ষা করা,
আমাদের কাজে প্রশাসন ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সাংবাদিকরা বিভিন্ন মতের আদর্শের থাকতে পারে এটি স্বাভাবিক কিন্তু কোন দলের হয়ে ক্যাডার ভূমিকা রাখবেন পরবর্তীতে কোন ঝামেলা হলে অথবা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করলে তখন আপনি নিজেকে সেভ করার জন্য বলবেন আমি তো আওয়ামী লীগ নয় সাংবাদিক। এটি মেনে নেয়া যাবেনা। আপনাদের একজন সাংবাদিক আছেন উনি জেলায় দায়িত্বে আছেন সে একজন ক্যাডার আমাদের দলকে হেয়পতিপন্ন করার জন্য সংবাদ প্রকাশ করেছেন এখন ওই সাংবাদিক আমাদের জেলা নেতৃবৃন্দকে ফোন করে বলেছেন উনার নাকি বাড়ি হামলা করেছে। আমাদের নেতাদের কাছে খাটো করার জন্য একটি নাটক সাজাচ্ছেন তিনি। ছিদ্দিক কমিশনার বাড়িতে লোক পাঠিয়েছি এলাকার কোন লোক বলতে পারেনি তার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এখানে একজন সাংবাদিক আছেন তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সেক্রেটারি দায়িত্ব রয়েছেন এবং বিগত দিনে সে একজন ক্যাড়ার ভূমিকা রেখেছেন রাস্তায় আমাদেরকে দেখলে আমাদের গায়ে হুন্ডা উঠিয়ে দিতো তার কাছে আমরা নিরাপদ ছিলাম না। সাংবাদিক রনি ও চর পার্বতী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ক্যাডার কামরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন তার বাড়িতে হামলা হয়েছে আমরা খবর নিয়ে দেখলাম তাদের বাড়িতে এমন কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি এভাবে তারা বিভিন্ন জায়গায় গুজব ছড়াচ্ছেন।

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন বলেন, গত ১৭ বছর সুশীল সমাজ কোথায় ছিল? সুশীল সমাজ দিয়ে বিপ্লব হয় না, শুধু আলোচনা হয়, বিপ্লব হয় গণমানুষ দিয়ে, এই সুশীলরা তখন কোথায় ছিল? আমাকে থানার সামনে আক্রমণ করা করা হলো আপনারা সাংবাদিকরা তো একজনও রিপোর্ট করেননি। আব্দুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে তো আপনারা কেউ লেখেন নি, লিখতে পারেননি, এখন তারা কি সুশীল হয়ে গেল মাত্র ১৭ দিনের কোন কিছু সহ্য হচ্ছে না তাদের । আপনারা এখন আমাদের বিরুদ্ধে দোষারোপ শুরু করেছেন আপনারা যাচাই বাছাই করে লিখেন যারা অনিয়ম করছে এরা কি আমাদের দলীয় লোক না কি অন্য কেউ। আমাদের দলের লোক না। সরকার পতনের জন্য হেলমেট বাহিনী, কিশোরগঞ্জ বাহিনী লাগেনি, কিন্তু তারা ১৭ বছর ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই বাহিনীগুলো ব্যবহার করেছে। তারা কি হেলমেট বাহিনী ব্যবহার করেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারছে ? আমাদের কোন কিশোর বাহিনী লাগবেনা, আমরা জনগণের পাশে আছি, জনগণের ভালোবাসায়, আন্তরিকতায় দিয়ে আমরা রাজনীতি করি। ৫ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছে এটি নির্যাতিত মানুষের বহিঃপ্রকাশ। এখানে বিএনপিসহ আমাদের জোটের কোন লোক হামলা করেনি। সব হচ্ছে বঞ্চিত মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। যাদের কে জিম্মি করে রেখেছে স্বাধীনভাবে কথা বলতে দেয়নি তারাই এ গুলি করেছে। আমরা চেষ্টা করেছি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। কিছুদিন পরে দেখা যাবে পত্রিকার কার্ড নিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, অপরাধী এসে আপনাদের সাথে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অনুপবেশ করবে এদের ব্যাপারে ছাড় নেই।এরা বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত ছিল এরা অনুপ্রবেশকারী। সাংবাদিক হচ্ছে এদেশের আয়না আপনারা যারা এত বছর মন খুলে লিখতে পারেননি আপনারা লিখেন, আমরা সহযোগিতা করবো।গত ১৭ বছর জিম্মি করা শাসন সম্পর্কে আপনারা লিখেন, ধারাবাহিক প্রতিবেদন লিখতে আমাদের কাছ থেকে সাক্ষাৎ নিতে চাইলে আমরা দেব। আপনারা এই স্বৌরশাসক, এই ফেরাউন আব্দুল কাদের মির্জার অপরাধের রিপোর্ট ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করুন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ন আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন বিগত ১৭ বছর আমরা শুধু নির্যাতন হয়েছি তা নয় সাংবাদিকরাও সত্য কথা লিখতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমাদের উপর দীর্ঘ ১৭ বছর যে নির্যাতন নিপীড়ন স্টিল রোলার চালিয়েছে বিশেষ করে এখানে সারা বাংলাদেশের চেয়ে কোম্পানীগঞ্জের চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ ছিলো। বিভিন্ন সময়ে, বিএনপির কোন তথ্য ফেলে তারা হেলমেট বাহিনী ও বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে বাড়ি ঘরে হামলা করেছে মানুষের উপর অত্যাচার করেছে নির্যাতন করেছে। এই ব্যাপার গুলি আপনাদেরকে (সাংবাদিক) বিবেচনা রাখতে হবে। তারা বলেছিল (আওয়ামী লীগ) তাদের পতন হলে ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী মারা যাবে শুধু কোম্পানিগঞ্জ না সারা বাংলাদেশে এই পরিস্থিতিতে ৫/৭ জন লোক ছাড়া তাদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। কোম্পানীগঞ্জে অস্ত্রের ঝনঝনানি তে একজন সাংবাদিকসহ শ্রমিক নিহত হয়েছে তাদেরকে সবাই আপনারা চিনেন কারা এই হত্যা করছে। আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে অস্ত্রের ব্যাপারে প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন যাতে করে কোম্পানীগঞ্জে সন্ত্রাস ও অস্ত্র মুক্ত হয়।

পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল মতিন লিটন বলেন, ১৭ বছর আমরা একটা মাস ভালো ভাবে ছিলাম কেউ বলতে পারবেনা। পাঁচ দিন বাড়িতে থাকলে পাঁচ দিন দিন বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে আমাদের দিন কেটেছে। সবকিছু উপেক্ষা করে আমরা টিকে আছি। আমরা এখানে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি আপনারাও যারা সাংবাদিক আছেন কম বেশ আপনারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করেছে । আপনারা সঠিকভাবে খবরগুলি দিতে পারেননি। এখন আপনাদের সঠিক কাজ করার দিন এসেছে কোম্পানীগঞ্জের মানুষ যে পরিমাণ নির্যাতিত হয়েছে সে অনুযায়ী কিছুই হয়নি। বিভিন্ন উপজেলায় যে ধরনের খবর শুনেছি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সে ধরনের কিছুই হয়নি। আপনারা সাংবাদিকরা আমাদের সাথে মোবাইলে কথা বলতেননা তাদের ভয়ে এড়িয়ে যেতেন।আপনাদের কাছ থেকে সঠিক নিউজ গুলি পেতাম না।গত ২৪ জুলাই কোন ঘটনা ছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অথচ ওই মামলার কোন ঘটনাই ঘটেনি।

আমি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসেবে বসুরহাটে দোকান -পাট ও ব্যবসায়ীদের যেন কোন ধরনের ক্ষতি না হয় আমরা দিনরাত পরিশ্রম করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। বসুরহাটে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি আগামীতেও সকলের সহযোগিতায় তাদের পাশে থাকবো।
বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মির্জা কাদের কোম্পানীগঞ্জে একটা অঘোষিত গডফাদার ছিলেন। ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি দখল করে এখানে আওয়ামী লীগের অফিস করেছে। বসুরহাট পৌরসভা অফিসে একটা রুম সেনা কুঞ্জের মতো একটি আয়না ঘর হিসেবে ব্যবহার করেছেন। উনারা (আওয়ামী লীগ) ছাড়া ওখানে কেউ যেতে পারতেন না। ওই আয়না ঘরে নিয়ে আমাদের দলের নেতা কর্মীদের কে নির্যাতন করতেন। আপনারা( সাংবাদিক) জানেন, বিভিন্ন নির্বাচনের সময় অস্ত্র প্রদর্শন করছে তারা। সাংবাদিকদের কাছে এ সকল তথ্য আছে। কোম্পানীগঞ্জে ফলের কার্টুনের মতো করে ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলার নির্বাচনে যে সকল অস্ত্র গুলি এসেছে পত্রিকার মাধ্যমে আপনারা তা প্রকাশ করুন।

উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে সবাই নিরাপত্তাহীনতা ছিলাম। আপনাদের ( সাংবাদিক) জায়গা থেকেও আপনাদের করণীয় জিনিসগুলি করতে পারেননি।
আজকের পর থেকে কোম্পানীগঞ্জে সাংবাদিকতা পেশায় যারা জড়িত আছেন আপনারা আপনাদের কলমের লিখনীর মাধ্যমে সমাজের অবিচার, অন্যায় গুলি তুলে ধরবেন।সেখানে যদি আমি (জাহিদুর রহমান রাজন) জড়িত থাকি তাও আপনারা লিখবেন বিন্দু পরিমাণ আমার কোন আপত্তি থাকবে না। আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবেন এটি আমারা প্রত্যাশা করি।

এসময়ে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিতি ছিলেন, বসুরহাট পৌরসভার বিএনপির সহ সভাপতি মমিনুল হক, ও শওকত হোসেন ছগির,বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: ছালা উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক ফজলুল কবির ফয়সাল, উপজেলা যুবদল সিনিয়র সহসভাপতি মেহেদী হাসান টিপু পাটোয়ারী, পৌরসভা ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরনবী সবুজ,বসুরহাট পৌরসভা যুবদল আহবায়ক ওবায়দুল হক রাফেল বসুরহাট পৌরসভা যুবদল সদস্য সচিব ও কাউন্সিলর মাজহারুল হক তৌহিদ, উপজেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক এমরান হোসেন সাগর, সদস্য সচিব নুর উদ্দিন রুবেল প্রমূখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

Popular

More like this
Related

কোম্পানীগঞ্জে নারীর অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী: প্রতিবাদে মানববন্ধন

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ৯ নং ওয়ার্ডে...

কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম’র বিরুদ্ধে গায়েবি পোষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

কেম্পনীগঞ্জ প্রতিনিধি :নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির অন্যতম সদস্য শিল্পপতি মো....

মুছাপুর নদী ভাঙনে শত বছর পুরনো বাড়ীঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে

এএইচএম মান্নান মুন্না: ডাকাতিয়া নদীর তীব্র ভঙ্গনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ...

এখনো নোয়াখালীতে পানিবন্দি হাজারো মানুষ

এএইচএম মান্নান মুন্না :: দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে গেল স্মরণাতীতকালের ভয়াবহ বন্যা। এরমধ্যে ফেনীর পানি নেমে গেলেও নোয়াখালীতে এখনো কাটেনি বন্যার রেশ গত ১৫ দিন ধরে পানিবন্দি নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ ফলে সেখানকার বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।বন্যা-পরবর্তী খাদ্য সংকটের পাশাপাশি প্রাদুর্ভাববেড়েছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের।তাদের ঘরগুলোও এখনো বসবাস অনুপযোগী।সবচেয়ে...