সারা বাংলা ডেস্ক :: নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি গাড়ির চাপায় মো. সোহেল রানা (৩৪) নামে মোটরসাইকেল আরোহী এক সংবাদকর্মী নিহত হয়েছেন। সোমবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সিংড়া উপজেলার নিংগইন তেল পাম্প এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনার সময় ইউএনও গাড়িটিতে ছিলেন না, তার স্ত্রী ওই গাড়িতে করে সিংড়া যাচ্ছিলেন।
নিহত মো. সোহেল রানা সিংড়া পৌর শহরের বালুয়া বাসুয়া মহল্লার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি আগপাড়া শেরকোল বন্দর উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। এছাড়া তিনি বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুরন্ত সংবাদের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকারের স্ত্রী মানসী দত্ত পাশের উপজেলা সিংড়ার গোল-ই আফরোজ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। ইউএনওর সরকারি গাড়িতে করে তিনি কলেজে যাচ্ছিলেন। পথে নিংগইন তেল পাম্প এলাকায় ওই গাড়ির চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী সাংবাদিক সোহেল রানা গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। দুপুর ১টার দিকে তিনি মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী আফজাল হোসেন, মো. সুলায়মান ও মো. শরিফুল ইসলামসহ স্থানীয়রা জানান, ইউএনওর গাড়ি দ্রুত গতিতে সিংড়ার দিকে আসছিল। নিংগইন এলাকায় সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাংবাদিক সোহেল রানার মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়।
দুর্ঘটনার পর ইউএনওর স্ত্রী মানসী দত্ত দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কলেজে চলে যান বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তিনি আহত সাংবাদিকের চিকিৎসার বিষয়ে কোনো তৎপরতা দেখাননি বলে জানান তারা। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ি দুটি উদ্ধার করেন।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিক সোহেল রানাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আল ইমরান।
ইউএনও এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সোহেল রানার চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম। তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। নিহতের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকার স্ত্রীকে তার গাড়িতে কর্মস্থলে পৌঁছে দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, নলডাঙ্গা ছোট উপজেলা, এখানে পেট্রল পাওয়া যাচ্ছিল না, তাই ড্রাইভারকে পাঠিয়েছিলাম সিংড়া থেকে পেট্রল আনতে।
নিহত সাংবাদিক সোহেল রানা পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সহ-সভাপতি এবং কালের কণ্ঠ শুভ সংঘের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।