নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নিজ নিজ পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন, ডেঙ্গু মুক্ত থাকুন’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বসুরহাট পৌর ৯নং ওয়ার্ডে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও মশার উৎপত্তিস্থল দূরীকরণের লক্ষ্যে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার ১৭ সেপ্টেম্বর বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ব্র্যাক-এর যৌথ উদ্যোগে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর আয়োজনে এবং বসুরহাট পৌরসভার সহযোগিতায় এই ক্যাম্পেইন পরিদর্শন করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক তানভীর ফরহাদ শামীম।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা( সচিব) হালীম উল্যাহ , নোয়াখালীর জেলা ব্র্যাক যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী (টিবি) ব্যবস্থাপক মোঃ নূরুল আলম , ব্র্যাক যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী (টিবি) অফিসার সনাতন তালুকদার,ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য প্রকল্পের (সিসিএইচ) অফিসার সাদিয়া সুলতানা,
ব্র্যাক প্রবাস বন্ধু ফোরাম – ২ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি, সাংবাদিক এএইচএম মান্নান মুন্না,ব্র্যাক যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী (টিবি)ফিল্ড অর্গানাইজার প্রোগ্রামার আব্দুল জলিল, ব্র্যাক যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী (টিবি)ফিল্ড অর্গানাইজার কামরুজ্জামান মোর্শেদ, বসুরহাট পৌরসভা কনভারজেন্সি ইন্সপেক্টর লিটন চন্দ্র মজুমদার, সমাজ সেবক ছালা উদ্দীন সুমনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সকাল ৯ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পৌরসভার ৯ওয়ার্ডে কোম্পানীগঞ্জ মড়েল স্কুল( কেজি) রোড় ও ক্যম্পাস,রেহান আলী চৌধুরী রোড়, ড্রেনসহ ৯নং ওয়ার্ডের প্রত্যেক সড়কের আশ পাশের বাসা বাড়ীর সামনে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানসহ সিএনজি যোগে তিনটি (৩) মাইক লাগিয়ে সচেতনা মূলক ক্যাম্পেইন ক্লিনিং (মাইকিং) করা হয়। এছাড়াও পরিচ্ছন্ন কর্মী দিয়ে এলাকায় জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার কর হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন,বসুরহাট পৌরসভাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হলে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ময়লা পরিষ্কারের কাজ করে থাকলেও, অনেক সময় সাধারণ মানুষের অসচেতনতায় রাস্তাঘাট ও ড্রেন নোংরা হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ড্রেনে আবর্জনা ফেলায় পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়, যা শহরের পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।আমি ব্র্যাক-এর এই সচেতনতামূলক উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। তাদের এই কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসনীয় এবং আমাদের সবার উচিত তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বসুরহাট পৌরসভাকে একটি পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর শহর হিসেবে গড়ে তোলা।
নোয়াখালীর জেলা ব্র্যাক যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী (টিবি) ব্যবস্থাপক মোঃ নূরুল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন,আজকের ক্লিনিং ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী সকল মাঠ সংঘঠক ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ব্র্যাকের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য প্রকল্প মাঠ পর্যায়ে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া সহ মোট ১২টি মশাবাহিত ও জলবাহিত রোগ প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন উঠান বৈঠক, মাইকিং, কমিউনিটি ক্লিনিক মিটিং এবং ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জসহ সকল উপজেলায় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আজকের ক্লিনিং ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ডেঙ্গুর জন্মস্থান ধ্বংস, ড্রেন ও জমে থাকা পানির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে তিনটি মাইকিং করা হয়। এর মাধ্যমে জনগণকে ডেঙ্গু মশা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে সচেতন করা হয়।
আগামি ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বসুরহাট পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডে আরেকটি ক্লিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত কার্যক্রমে স্থানীয় প্রতিনিধি, সাংবাদিক, এবং সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা কামনা করছি।
এ সময়ে ব্রাকের সিসিএইচ অফিসার সাদিয়া সুলতানা বলেন, বসুরহাট পৌরসভাতে মশা ও ডেঙ্গুমুক্ত রাখতে হলে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রত্যেকের নিজ নিজ বাড়ির আঙিনা, ছাদ, ফুলের টব, টায়ার, পরিত্যক্ত পাত্র, এমনকি এসির জলীয় অংশেও যদি জল জমে থাকে, তাহলে সেখানে মশার লার্ভা জন্ম নিতে পারে। তাই নিয়মিতভাবে এই স্থানগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরী।
ব্র্যাক যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী (টিবি) অফিসার
সনাতন তালুকদার, বলেন, বসুরহাট পৌরসভাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হলে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না। ময়লা আবর্জনা অবশ্যই ডাস্টবিনে ফেলতে হবে, তাহলে এই শহর সুন্দর থাকবে। আসুন আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর একটি বসুরহাট পৌরসভা গড়ি।
উল্লেখ্য : ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো মশাবাহিত রোগ যেমন ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মশার উপদ্রব হ্রাস করা।