এএইচএম মান্নান মুন্না: ডাকাতিয়া নদীর তীব্র ভঙ্গনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ৭ নং ওয়ার্ড পুরো গ্রাম বিলীন হওয়া মাত্র সময়ের ব্যাপার। তীব্র ভাঙ্গনে আজকে যে বাড়িঘর, গাছপালা স্থাপনা দেখা যাচ্ছে সেটি আগামী কাল গেলে দেখা মিলছে না এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১’শ বছর পুরনো বাড়ী উত্তাল ডাকাতীয়া নদীর আগ্রাসী ভাঙনে সেই মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের শত শত বাড়ি, সহস্রাধিক ঘর বাড়ী ও রাস্তাঘাট, মসজিদ,পারিবারিক কবরাস্তান মক্তব,জনতা বাজার দোকান- পাট বিলীন হয়ে গেছে।
অনেকের মা বাবা, স্বজনহারা মানুষগুলির কবর দেয়া হয়েছিল বসতভিটার পাশে। এখন নিজের পরিবার ও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিলেও নিতে পারছেন না স্বজনদের কবরগুলি।অনেকের মা বাবার শেষ স্মৃতি হিসেবে থাকা সেই কবরটি নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে, চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানি ছল ছল করলেও বুকের মাঝে কান্না ধরে রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই। সহায়সম্বল হারিয়ে কেউ রাস্তার পাশে কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এভাবে নদী ভাঙ্গায় ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
শত শত হেক্টর রোপা আমন ধান ক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কৃষকের মাথায় হাত রাখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। দুশ্চিন্তায় যাচ্ছে তাদের দিন রাত।
অপর দিকে মুছাপুর রেগুলেটর যাওয়ার প্রধান যে সড়ক সেটিও আজ কালের মধ্যে ভেঙে যাওয়ার পথে। বনবিভাগের তত্ত্বাবধানে সারি সারি ঝাউগাছ বাগানটিও আজ হুমকির মুখে।
২০০৯ সালে মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণ করার পর মুছাপুর সী -বিচ ছিল সরকার অঘোষিত একটি পর্যটন কেন্দ্র।রেগুলেটর এলাকাটা অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে সব বয়সী মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে বিনোদনের জন্য মুছাপুর সী-বিচ দুই ঈদে হাজার হাজার মানুষ পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসতো। সবে মাত্রএই এলাকার মানুষের সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছিলো, খুলছিলো ভাগ্যের চাকা, সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মক্ষেত্র। সর্বোপরি বলা যায়, হয়ে উঠেছে সী- বিচ বাসীর জন্য একটা আশীর্বাদ। রেগুলেটরটি ভেঙে যাওয়াতে তাদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন দুঃস্বপ্ন আর অভিশাপ।