নোয়াখালী -৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ফখরুল ইসলামকেকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র

Date:

এএইচএম মান্নান মুন্না :
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী – ৫ আসনে ইতিমধ্যে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। তার এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বিএনপির কিছু সুবিধাবাদী লোক তাকে নানাভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে এ আসনের সাধারন জনগন ও বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা কড়া প্রতিবাদ করছেন। তাদের ভাষ্য, ফখরুলের মত একজন নিবেদিত প্রাণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বিতর্কিত করার মাধ্যমে প্রকারান্তরে তারেক রহমানের সিদ্ধান্তকে তারা চ্যালেঞ্জ করে দলের ক্ষতি করছে। এ থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসা দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।

নোয়াখালী -৫ আসনটি দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে বিবেচিত। এ আসনে ইতিপূর্বে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ নেতৃত্ব দিয়েছেন। উনার মৃত্যুর পর  শক্ত হাতে দলের হাল ধরেছেন ফখরুল ইসলাম। তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নন, একজন স্বনামখ্যাত ভ্যবসায়ী হিসেবে দেশব্যাপী রয়েছে অনেক সুনাম। বিগত সরকারের সময় তিনি নানভাবে নিপীড়িত হয়েছেন। নানা হয়রানী ও জেল জুলুমেরও শিকার হয়েছেন এ নেতা। কিন্ত দলকে দিয়েছেন উজার করে। দলের দুর্দিনে আগলে রেখেছেন নেতাকর্মীদের । এলাকার উন্নয়নে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করেছেন দুহাতে। তারমতো একজন সজ্জন লোক নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে যেতে পারলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ও সাধারন মানুষের জন্য অনেক কিছু করতে পারবেন তিনি। আর মানুষের মনের কথা বুঝতে পেরেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে এ আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন বলে সাধারন ভোটারদের ধারনা। অথচ দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দলের কিছু কুচক্রিমহল উঠেপরে লেগেছে তাকে নানাভাবে বিতর্কিত করতে। দলের এসব সুবিধাভোগি লোকদের এ চক্রান্তকে সাধারন ভোটার ও জনসাধারন ভাল চোখে দেখছেন না ।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন,  নির্বাচনী মনোনয়নে নির্বাচনী প্রচারণা, দলীয় শোডাউন ও প্রার্থীর নিজস্ব ইসতেহারে দলীয় বিবেচনা দলীয় জনশক্তি ও জনগনের আশানুরূপ হওয়া বাঞ্ছনীয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি দলের প্রার্থী বাছাইয়ে ফর্মুলার ভিন্নতা থাকে। তথাপি প্রতিটি দলের প্রায়োরিটিতে ব্যক্তিত্ব, সৎ গ্রহনযোগ্যতা প্রাধান্য পায়। একটি দলের লক্ষ লক্ষ কর্মি ও হাজার হাজার নেতাকে সন্তুষ্ট রাখা দূরূহ হয়ে পড়ে। ঘোষিত আগামী ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি ইলেকশন নিয়ে দেশের বড়ো দলগুলোর অবস্থা ত্রাহি মধুসূদন। শ্যাম রাখি না কুল রাখি এমন পরিস্থিতিতে দলের সিদ্ধান্তে অনেকেই বিরাগভাজন  হয়।‌ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়নে সমস্যা না থাকলেও বিএনপির খসড়া মনোনয়ন তালিকা সামনে আসার পর থেকে সারাদেশে নেতাকর্মীদের পরস্পর বিরোধী অবস্থানে দলীয় নেতা কর্মীদের খুনাখুনি প্রতিদিন মিডিয়ায় ফলাও হয়। পরস্পরের প্রতি ঘৃনা ছড়ানো, চরিত্র হনন, মিথ্যা প্রোপাগান্ডা, দলাদলি চলমান রয়েছে।

নোয়াখালী -৫ আসনের  মনোনয়ন নিয়েও  শুরু হয়েছে এ ধরনের চক্রান্ত। এই আসনের শুরুতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় ছিল, বেগম হাসনা মওদুদ, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ও গোলাম হায়দার বিএসসি প্রমুখ।

এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দলের চুড়ান্ত তালিকায় কেন্দ্রীয় ঘোষনায় মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের নাম আসায় বাকীদের মধ্যে বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ  গোস্যা হয়ে নানা প্রোপাগান্ডায় লিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের চরিত্র নিয়ে নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে। ফখরুল ইসলামের দলীয় পরিচয় নিয়ে জামাতি ট্যাগ লাগানো, এস আলমের দোসর ইত্যাদি প্রচারণায় স্থান পায়। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত অসত্য অবাস্তব কাহিনীর ও প্রমান মিলেছে।  আবেদ চৌধুরী বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ পল্লি উন্নয়ন সম্পাদক এবং ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পক্ষান্তরে বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ২০০১ সালের পর থেকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সাথে সখ্যতা ও অনুপ্রেরণায় বিএনপির রাজনীতির প্রতি ঝুঁকে পড়েন। বিগত ২৫ বছরে নিজ ব্যবসার পাশাপাশি মওদুদ আহমেদের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারনে তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে পড়েন । তার বিরুদ্ধে দেওয়া হয় বিভিন্ন মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। ২০১৩ সালে হেফাজতের অর্থ যোগানদাতার মিথ্যা অজুহাতে তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে নেয় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার। এর ফলে এই শিল্পপতির শত শত কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। তিনি ২০০৮ সালের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে চার দলীয় প্রার্থী ছিলেন।

মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের ছাত্রজীবনের  রাজনীতির শুরু বসুরহাট সরকারী কলেজে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে ভিপি ইলেকশনের মধ্য দিয়ে। এরপর চট্টগ্রাম মহসিন কলেজ হয়ে বিবিএ শেষে ইবনেসীনায় চাকুরীর সুবাধে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় জড়িয়ে এ যাবৎকালের একজন সফল ব্যবসায়ী ও অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্নধার তিনি। ঢাকার মেট্রো গ্রুপ ও ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের বর্তমান চেয়ারম্যান। রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও কখনো জামাতের  রোকন ছিলেননা। একই আসনে বেগম হাসনা মওদুদ প্রার্থী হলেও তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টির সাংসদ ছিলেন। ২০১০ সালে কতিপয় আওয়ামী লীগের উচ্ছিষ্টভোগী অন্যায় ভাবে তাঁকে ফারইষ্টের সকল দায়িত্ব থেকে সরিয়ে একটি চক্র লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করে। অথচ মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সময়ে এই প্রতিষ্ঠানটি যেই পরিমান ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। পরবর্তীতে শেয়ার মালিকদের ভাগ্যে  এত শেয়ার আর জোটেনি। বিগত সরকারের রোষানলে পরে  রাজনীতিতে কোনঠাসা হয়ে তিনি  তেমন সুবিধা করতে পারেননি। কিন্ত  তার সততা ও দক্ষতার বিবেচনায় লোকসান প্রতিষ্ঠান পদ্মা লাইফের পরিচালকদের আগ্রহে সাইফুল আলম (এস আলম) গং সর্ব সম্মতিক্রমে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামকে  এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মনোনীত করে। লাইনচ্যুত এ কোম্পানির হাল ধরে তিনি সফলতার পথ দেখিয়ে  পদ্মা লাইফের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন। ঐ সময়কার বিভিন্ন বিষয়ের পরামর্শ মিটিংয়ের ছবিকে তাঁর প্রতিপক্ষরা নির্বাচনে অপপ্রচার চালানোর হাতিয়ার হিসেবে এখন ব্যবহার করছে।  মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের ৪৫ বছর পূর্বের রাজনীতিকে ইস্যু করে প্রকারন্তরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তকেই বৃদ্ধাংগুলি প্রদর্শন যারা করছে ৫ ই আগষ্টের পূর্বে তিনিই এই আসনের মামলা হামলার স্বীকার জনশক্তির পাশে দাঁড়িয়ে আদালত পাড়া সহ দলের সকল প্রোগ্রাম নিজ দায়িত্বে বাস্তবায়ন করেছিলেন। ঐ ভীবিষিকাময় পরিস্থিতিতে আজকে দলের কান্ডারি হিসেবে দাবিদারদের দেখা যায়নি। তাকে শিবির কিংবা জামাতের ট্যাগ লাগিয়ে বা এস আলমের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা খুজে তাকে বিব্রত করা হচ্ছে। প্রকারান্তরে তারা দলকে বিতর্কিত করছে, দলের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তকে বিতর্কিত করছে বলে অভিমত এলাকার সাধারন মানুষ ও ভোটারদের।
দএলাকার জনমত যাচাইয়ের ভোটারদের এই সকল অভিমত বলে দেয় বিএনপির দুর্দিনের কান্ডারি ফখরুল ইসলামই  একমাত্র এ আসনের যোগ্য প্রার্থী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

Popular

More like this
Related

নোবিপ্রবিতে রিসার্চ প্রপোজাল রাইটিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ

নোয়াখালী প্রতিনিধি:নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে...

নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাহিদ, সম্পাদক মুদ্দাচ্ছির

নোয়াখালী প্রতিনিধি:নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (নোবিপ্রবিসাস)...

যোগ্য মানুষকে নির্বাচিত করতে না পারলে এদেশের ভোগান্তি শেষ হবেনা -তানিয়া রব

নোয়াখালী প্রতিনিধি:‎জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব...

মনোনয়ন না পেয়ে ধানের শীষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে বিএনপি নেতা আবেদ!

নোয়াখালী প্রতিনিধি:নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ–কবিরহাট ও সদরের অংশ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন...