Home Blog Page 8

‘নারায়ে তাকবির’ ও ‘কাউয়া কাউয়া’ স্লোগানে ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ভাঙচুর, আগুন

0
https://noakhalitimes.com

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক,পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে ছাত্র-জনতা। পরে ঘরগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এ সময় সেখানে ‘নারায়ে তাকবির’, কাউয়া কাউয়া’ ও ‘কাউয়া কাদের’ সহ নানা স্লোগান দেওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষনা দেন, মিশন কাউয়া কাদের বেলা ১১ টা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র জনতা জড়ো হতে থাকে ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে। দুপুর পৌনে ১টার দিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী স্লোগান নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড বড় রাজাপুর এলাকার কাদেরের বাড়িতে প্রবেশ করে হাতুড়ি শাবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। বাড়ী ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ শেষে ওবায়দুল কাদেরর আরেকভাই শাহাদাতের বাড়ীতেও অগ্নিসংযোগ করে ছাত্র জনতা।

স্থানীয়রা জানান, বসুরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে ওবায়দুল কাদেরের গ্রামের বাড়ি হলেও তিনি এ বাড়িতে থাকতেন না। মূলত এ বাড়িতে তার ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা, তার আরেক ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহাদাত হোসেন ও মাস্টার ফজলুল কাদের মিন্টু খান থাকতেন। নোয়াখালী সফরে আসলে ওবায়দুল কাদের এ বাড়িতে আসতেন, নেতা-কর্মীদের সাথে স্বাক্ষাত এবং দুপুরে খাওয়ার পর বিশ্রাম নিয়ে পুনঃরায় চলে যেতেন।

বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বলেন, গত জুলাই আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর যে হামলা ও নিপীড়ন চালিয়েছল তার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন ওবায়দুল কাদের । তার নির্দেশে নিরপরাধ ছাত্রদের হত্যা করা হয়েছে, তার নির্দেশে চলছিল শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন। আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ অপকর্মের মূলহোতা ওবায়দুল কাদের। তিনি এখনও পলাতক, পালিয়ে থেকেও তার দলের নেতাকর্মীদের উস্কে দিচ্ছেন এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন।

ছাত্রজনতা আরও অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্টের পর ওবায়দুল কাদেরের ভাইরা তাদের পরিবার নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর কে বা কারা ইন্ধন দিয়ে তার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি পুনঃনির্মাণ কাজ চালাচ্ছে। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি করেছেন।

প্রসঙ্গত, বুধরাত রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর চালায় ছাত্রজনতা। এরপর সুধাসদনেও আগুন দেওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালগুলোতে হামলা চালানো হয়।

কোম্পানীগঞ্জে ইয়াবা ও গুলিসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

0
https://noakhalitimes.com

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়ন থেকে ইয়াবা ও গুলিসহ মাদক কারবারি নুরুল গনিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময়-৭১০ পিস ইয়াবা, ২ রাউন্ড গুলি, মাদক বিক্রয়লব্দ নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আজিজ মহুরী বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মো.নুরুল গনি (৪৩) উপজেলার একই ইউনিয়নের মৃত নুরুল আবসার সেন্টুর ছেলে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মাদক কারবারি গনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধ মাদকদ্রব্য ও বিস্ফোরক আইনে মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। গ্রেপ্তাকৃত মো. নুরুল গনি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং এলাকায় মাদক ব্যবসায় আধিপত্য ও ত্রাস সৃষ্টির জন্য মাদকের পাশাপাশি অস্ত্র নিয়ে ঘুরাফেরা করেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গনির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুব্রত সরকার শুভ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও অস্ত্র আইনে কোম্পানীগঞ্জ থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিচারিক আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

লক্ষ্মীপুরে হামলায় চার সাংবাদিক আহত

0

লক্ষীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধসহ চার সাংবাদিক আহত হয়েছে। আহত সাংবাদিকরা হচ্ছে, দৈনিক খবরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম,চন্দ্রগঞ্জ থানা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও আমার সংবাদের প্রতিনিধি আলাউদ্দিন,প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক ও আলোকিত সকালের প্রতিনিধি ফয়সাল মাহমুদ,অনলাইন পোর্টালের ন্যাশনাল প্রেসের প্রতিনিধি নিরব হোসেন। গুরুতর আহত সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম,আলাউদ্দিন ও ফয়সাল মাহমুদকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রফিকুলের অবস্থায় গুরুতর। সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার গনেশশ্যামপুর এলাকায় এই দূর্ঘটনা ঘটে। এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব ও লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সাংবাদিক সংগঠসহ জেলায় কর্মরর্ত সাংবাদিকরা।

আহত সাংবাদিক ও পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার গনেশ্যামপুর এলাকায় মারামারি ও জমি দখলের সংবাদ পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য লক্ষ্মীপুর থেকে দুইটি মোটসাইকেলে যোগে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন সাংবাদিকরা। এসময় দত্তপাড়া কলেজ থেকে কিছুদুর সামনে গেলে ৭ জনের একদল মুখোশধারী সন্ত্রাসী সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে তার ওপর ধারালে অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে তার মাথায় পেটে যায়। এরপর অন্য সাংবাদিকরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এতে ফয়সাল মাহমুদের গায়ে গুলি লাগে। এসময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও মোবং নগটদ টাকা পয়সা লুটে নেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনার খবর শুনে সদর হাসপাতালে ছুটে যান সাংবাদিকরা। এর মাস খানেক আগে সাংবাদিক রফিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।

এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবী জানান প্রেক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমেদ হেলাল-সাধারন সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল ও লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জহির উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক আব্বাছ হোসেনসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিক সমাজ। দ্রুত জড়িতদের গ্রেফতার না হলে কঠোর কর্মসুচির হুশিয়ারী দেন তারা।

সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. কমলাশীষ জানান, তিনজনকে আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থায় গুরুতর। তার মাথায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। পাশাপাশি অন্য আহত ফয়সাল মাহমুদের পায়ে দুইটি আঘাত রয়েছে। সেটা গুলি কিনা বিষয়টি এক্্র করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের চিহিৃত করে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। এই বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। ইতিমধ্যে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।

কোম্পানীগঞ্জে প্রধান শিক্ষককে মারধর করল বিএনপি নেতা

0
https://noakhalitimes.com/

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম চরকাঁকড়া পন্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াছিনকে প্রকাশ্যে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত রেজাউল হক (৫৫) উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।

রোববার ১২ টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের পন্ডিতেরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে পশ্চিম চরকাঁকড়া পন্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছিল। সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল হকের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় তিনি বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি করতে তার ছেলে একই বিদ্যালয়ের ছাত্র ও উপজেলার পেশকারহাট জনতা ব্যাংক শাখার ক্যাশিয়ার তানভীর হোসেন শুভর (২৮) নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু বিএনপি নেতার ছেলের বয়স কম হওয়ায় বয়োজৈষ্ঠ এ.বি.এম ছিদ্দিক (৭৫) ও এ.কে এম আব্দুল ওহাব (৬৩) ও গোলাম সরওয়ারের (৪৭) নামের তালিকা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।

এডহক কমিটির সভাপতির তালিকায় ছেলের না দেয়ায় প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হন রেজাউল। রোববার বেলা ১১টার দিকে জরুরি কাজে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিএনপি নেতা রেজাউল প্রধান শিক্ষক ইয়াছিনের গতিরোধ করে পথ আটকায়। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে গালমন্দ করে কিল,ঘুষি দেন। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা রেজাউলের ফার্মেসি দোকান ভাংচুর করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল হক অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, প্রধান শিক্ষককে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে একটু গালমন্দ করেছেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তিনি ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে গত ১৪ বছর ধরে নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ছেলে মাস্টার্স পাশ। তার সাথে আরও তিনজন এডহক কমিটিতে প্রার্থী সবাই ডিগ্রি পাশ। প্রধান শিক্ষক অন্য আরেক জনের সাথে চক্রান্ত করে তার ছেলের নামটি তালিকায়ও রাখেনি।

পন্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াছিন অভিযোগ করে বলেন, রেজাউল হকের ছেলে তানভীর হোসেন শুভর নাম এডহক কমিটিতে না দেয়ায় আমার অশোভন আচরণ করে। তার ছেলের বয়স কম হওয়ায় তা দেয়া যায়নি। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করেই তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

এবিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা আহবায়ক আলো, সদস্য সচিব হারুন

0

এএইচএম মান্নান মুন্না :: বহুল প্রত্যাশিত নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা শেষে আকাঙ্খিত জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান হল। কমিটিতে মাহবুব আলমগীর আলোকে আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুন অর রশিদ আজাদকে সদস্যচিব করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

রবিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় বিএনপি’র যুগ্ন সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটির ঘোষণা দেয়া হয়। কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক করা হয় নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি, সাবেক সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী জেলা বারের সর্বাধিকবার নির্বাচিত সভাপতি এডভোকেট এ বি এম জাকারিয়াকে, সদস্য হিসেবে আছেন, সদ্য বিলুপ্ত হওয়া নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি ও নোয়াখালী জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান।

দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালী জেলা বিএনপির রাজনীতিতে এই কমিটিকে কেন্দ্র করে উত্তাপের আভাস নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছিল রাজনীতির মাঠ।

মাহবুব আলমগীর আলো জেলা বিএনপির রাজনীতিতে এক পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ত্যাগের তুলনায় প্রাপ্তির হিসাব ছিল কম। ঢাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে এসে তিনি নিজ জেলা নোয়াখালীর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৭৭ সালে স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হা/ না ভোটের সময় থেকেই ছাত্রদলের সাথে যুক্ত হন তিনি। এরপর কলেজে পড়াকালীন তিনি সোনাপুর কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।

নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ছিলেন এবং সেসময় নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে ভিপি ইলেকশন করেন। জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক থাকা অবস্থায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন (দুদু-রিপন পরিষদ)। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের (জালাল বাবলু পরিষদ) সহ সম্পাদক ছিলেন। এরপর ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির ৮ নং সদস্য হন এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটির সহসভাপতি ছিলেন।

কেন্দ্রীয় যুবদলের (আব্বাস- গয়েশ্বর) কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এরপর যুবদলে কেন্দ্রীয় কমিটির (বুলু- আলাল) কমিটির বিশেষ সম্পাদক হন। নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি ছিলেন। সুধারাম থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে দলের দুঃসময়ে ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী আন্দোলনসহ দলীয় কার্যক্রমের বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তার এই সংগ্রামী জীবনে তিনি বহুবার নির্যাতিত হয়েছেন। জেল জুলুম মিথ্যা মামলায় আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরে ঘুরে সময় কেটেছে তার। তিনি আহবায়ক পদের যোগ্য দাবিদার ছিলেন বলে জানায় নেতাকর্মীরা। যে কারণে জেলা বিএনপির আহবায়কের দায়িত্ব পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে উচ্ছ্বসিত হয়ে নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করে।

অপরদিকে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া হারুন অর রশিদ আজাদ একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে তার অনেক সাফল্যের স্মৃতি। ছাত্র রাজনীতি দিয়ে শুরু তার রাজনৈতিক জীবন। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সেই থেকে তার রাজনৈতিক জীবনের উত্থান, একাধারে তিনি কয়েকবার নোয়াখালী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। এরপর নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই নেতা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। জননন্দিত নেতা হিসেবে তিনি দুই দুইবার মেয়র নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পৌরসভা নির্বাচনে জোরপূর্বক তার বিজয় ছিনিয়ে নেয় আওয়ামীলীগ প্রার্থী শহিদুল্লাহ খান সোহেল।

উল্লেখ্য এর আগে, ২০১৬ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সভাপতি পদে এডভোকেট আব্দুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুব আলমগীর আলো’কে ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটির মেয়াদ দুই মাস যেতে না যেতেই আবারও নতুন করে কমিটি দেয়া হয়। যেখানে গোলাম হায়দার বিএসসি’কে সভাপতি করে অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সেই ২০১৬ সাল থেকে অদ্যাবধি আর কোন কাউন্সিল হয়নি।

২০১৬ সালের কাউন্সিলে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে হারুন অর রশিদ আজাদ ছিলেন একজন প্রভাবশালী প্রার্থী। সেই কাউন্সিলে তাকে সভাপতি ঘোষণা না করায় জেলা বিএনপির রাজনীতিতে দলীয় কোন্দল মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ২০১৬ সালের কাউন্সিলের পর থেকে পদবিবিহীন হারুন অর রশিদ আজাদ রাজনীতিতে খানিকটা নিষ্ক্রিয় থাকার পর দীর্ঘ নয় বছর পর জেলা বিএনপির কমিটিতে পুনরায় সদস্য সচিব হিসেবে ফিরে এসেছেন।

এদিকে নতুন হিসেব নতুন মেরুকরণে রাজনীতির মাঠে কতটুকু উত্তাপ ছড়ায় তা এখন দেখার বিষয়। তবে দীর্ঘ দিন ধরে জেলা বিএনপির কমিটিকে কেন্দ্র করে হারুন অর রশিদ আজাদের অনুসারীরা বিভক্ত হওয়ার গুঞ্জন ও রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকলেও তা খুব শক্তভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ্য হয়েছেন জেলা পর্যায়ের সকল সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। নবঘটিত আহ্বায়ক কমিটির সকল নেতারা দলীয় নেতাকর্মীদের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুশৃংখল ভাবে দেশ ও দলের জন্য কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।

বিএনপির গণসমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

0

টাইম ডেস্ক :
রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে নোয়াখালীর হাতিয়ায় বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সমাবেশে বিএনপি নেতা আবুল বাসার ফুল মিয়ার ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলা বিএনপি, পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম আদর্শ মহিলা কলেজ মাঠে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সদস্য খোন্দকার মো. আবুল কালাম, আর সঞ্চালনা করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল উদ্দিন রাশেদ। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম।

সমাবেশে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। হাতিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আবুল বাসার ফুল মিয়া তার বক্তব্যের শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

তবে আবুল বাসার ফুল মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিইনি। এটা আমাদের দুশমন, আমাদের খান্দানের দুশমন। আমি কেন জয় বাংলা বলবো? আমি তারেক জিয়া জিন্দাবাদ বলেছিলাম। আমার পাশ থেকে অন্য কেউ জয় বাংলা বলেছিল।”

হাতিয়া পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন বলেন, “বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করতে বলা হয়েছিল। আবুল বাসার ভাই ‘জয় হোক বাংলাদেশ, চিরজীবী হোক’ বলতে গিয়ে ভুলবশত জয় বাংলা বলে ফেলেছেন। তবে তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলেননি। মানুষ মাত্রই ভুল করে, তিনি ইচ্ছাকৃত করেননি।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা বলেন, “জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগ বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন-নিপীড়ন চালিয়েছে। এখন শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর কিছু নেতা সুবিধা নিতে দল বদলানোর চেষ্টা করছে। আবুল বাসার ফুল মিয়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন নানা সুবিধা নিয়েছেন। বিএনপির সমাবেশে তার এমন বক্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।”জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান বলেন  “বিএনপির কোনো নেতাকর্মী নিষিদ্ধ স্লোগান দিতে পারবে না। সংগঠনবহির্ভূত কোনো কর্মকাণ্ডে কেউ জড়ালে, সে যেই হোক, তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন নোয়াখালীর সৌরভ,চাঁপায় নবাবগঞ্জের ফৌজিয়া

0

টাইম ডেস্ক:
বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন নোয়াখালীর ‘বর’ ইঞ্জিনিয়ার এমদাদ হোসেন (সৌরভ) ও চাঁপায় নবাবগঞ্জের ‘কন্যা’ ডাক্তার ফৌজিয়া জামান।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) ঢাকা মোহাম্মদপুর রায়ের বাজার হেডওয়ে রাজকমল আবাসিক কনভেনশনে পারিবারিকভাবে বিকাল ৩ টায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

এই নব দম্পতি নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের সমাজ সেবক ও দানশীল ব্যাক্তিত্ব নুর আমিন (মাইজ্জা মিয়া) এর চতুর্থ পুত্র ও সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ABDUR RAHIM NURAMIN এর ছোট ভাই ইঞ্জিনিয়ার এমদাদ হোসেন (সৌরভ) এবং চাঁপায়নবাবগঞ্জের রহনপুর এলাকার শিক্ষক মনিরুজ্জামান বিএসসি’র কন্যা ডাক্তার ফৌজিয়া জামান’র সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
এ নব দম্পতির নতুন জীবনের স্বপ্নিল সূচনা রাঙানো (বৌভাত) অনুষ্ঠানে ডাক্তার, সাংবাদিক, কবি সাহিত্যিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বন্ধু- বান্ধবসহ নিকট আত্মীয় – স্বজন ছিলো আমন্ত্রিত।
এ নব দম্পতি একে অপরকে পেয়ে ভারী খুশি। তাদের বিবাহিত নবজীবন পদার্পণে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।ব্যক্তিগত জীবনে তারা সুখী হবেন বলে অতিথিরা এমন প্রত্যাশা করেন।

বিবিএস প্রতিবেদন,দেশের সবচেয়ে ধনী নোয়াখালী জেলা

0

টাইম ডেস্ক :
দেশের সবচেয়ে ধনী জেলা নোয়াখালী। এছাড়া দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে দেশে। এখন দেশে সবচেয়ে বেশি দরিদ্র মানুষের বসবাস বরিশাল বিভাগে। জেলা হিসেবে সবচেয়ে দরিদ্র মাদারীপুর।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২’- এ তথ্য উঠে এসেছে।এতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পোভার্টি অ্যান্ড লাইভলিহুড স্ট্যাটিসটিকস সেল এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। শহরে দারিদ্র্যের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ হলেও গ্রামে যেটি ২০ শতাংশেরও বেশি।

বিবিএসের দারিদ্র্য মানচিত্রে দেখা গেছে, দেশের বিভাগীয় দারিদ্র্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে কম দারিদ্র্য ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।
জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্য মাদারীপুর জেলা। এ জেলায় দারিদ্র ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ; আর জেলা হিসেবে সবচেয়ে ধনী নোয়াখালী। এ জেলায় দারিদ্র ৬ দশমিক ১ শতাংশ।

আর উপজেলা হিসেবে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ দারিদ্র্য নিয়ে শীর্ষে রয়েছে মাদারীপুরের ডাসার। আর সবচেয়ে কম দারিদ্র্য ঢাকার পল্টনে। এ এলাকায় দারিদ্র্য ১ শতাংশ।

আসছে নুতন জোট “যুক্তফ্রন্ট “

0

টাইম ডেস্ক:

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো বুর্জোয়া রাজনৈতিক শক্তিকে মোকাবেলায় দেশের বাম-প্রগতিশীল শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্রুতই ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। যে জোটের সঙ্গে দেশের বামপন্থী দলগুলোর পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চায় বিশ্বাসী বিশিষ্টজনরাও যুক্ত হবেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

তাঁরা জানান, ব্রিটিশ-পাকিস্তানি আমলের মতো দেশের স্বাধীনতার পর ক্ষমতার পালাবদলে উন্নতি হলেও সমাজের পরিবর্তন হয়নি। অতীতেও সমাজে যেমন মানুষের মধ্যে রাজা-প্রজার সম্পর্ক ছিল, এখনো সেই সম্পর্ক বিরাজমান। স্বাধীনতার পর থেকে দেশ শাসন করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো বুর্জোয়া রাজনৈতিক দল, যারা মূলত ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে। এ জন্য বুর্জোয়াদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই জোরদার করতে বাম-প্রগতিশীলদের ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ জরুরি। আর সেই তাগিদ থেকে যুক্তফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই জোট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেবে বলেও আশা করা হচ্ছে।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘বাম, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, উদারনৈতিক ও স্বাধীনতার পক্ষের’ রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও বাংলাদেশ জাসদের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আহম্মদ ফজলুর রহমান মুরাদ

লেখক ও রাজনৈক বিশ্লেষক

সমাধান একটাই যুক্তফ্রন্ট

0

সেটা হলো ৮০ জনের দলের স্বতন্ত্র অবস্থান চাই– বুর্জোয়া দলগুলোর বিপরীতে নয় শুধু, তাদের বিরুদ্ধেই। অর্থাৎ প্রগতিশীল, গনতান্ত্রিক ও সমাজতন্ত্রীদের ঐক্য চাই, বুর্জোয়া রাজনীতির বিরুদ্ধে। বুর্জোয়া রাজনীতি কেবল সেক্যুলার দলগুলোই যে করে, তা নয়; ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকরাও একই পথের পথিক। তারাও সম্পদের ব্যক্তিমালিকানায় বিশ্বাস করে এবং সমাজতন্ত্রীদের পহেলা নম্বরের শত্রু জ্ঞান করে থাকে। সেক্যুলার বুর্জোয়ারাও সমাজতন্ত্রবিরোধী। তাদের ভাষা কিছুটা ভিন্ন ধরনের; এই যা।

ঐক্য তাই দরকার সমাজ পরিবর্তনের পক্ষের মানুষদের। অর্থাৎ ৮০ জনের ঐক্য ২০ জনের বিরুদ্ধে। এই ঐক্যের লক্ষ্য হওয়া চাই সামাজিক বিপ্লব সম্পন্ন করে পুঁজিবাদ-ফ্যাসিবাদকে স্থায়ীভাবে বিতাড়ন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যটা গড়ে উঠতে পারে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে; প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোর যুক্তফ্রন্ট গঠন করার মধ্য দিয়ে। যুক্তফ্রন্ট আমরা আগেও দেখেছি। যেমন ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট। সেটা ছিল হযবরল ধরনের নির্বাচনী জোট। ওই জোট গঠনে সবচেয়ে উৎসাহী ছিলেন কমিউনিস্টরা। কিন্তু তারাই বাদ পড়ে যান সবার আগে, নেজামে ইসলামের আপত্তির কারণে, যে-পার্টির উদ্ভব ওই জোট গঠন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই।

এবারের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনী জোট হবে না। হবে আন্দোলনের যুক্তফ্রন্ট। এই যুক্তফ্রন্ট প্রয়োজনে নির্বাচনে অংশ নেবে, যাতে জনসংযোগ, আদর্শ প্রচার এবং সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করা যায় সেই লক্ষ্যে। যুক্তফ্রন্ট কেবল কেন্দ্রে থাকবে না, গঠিত হবে প্রতিটি শহরে, পাড়ায়, মহল্লায়। গঠিত হবে বায়ান্নতে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ এবং ঊনসত্তরে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ যেভাবে গঠিত হয়েছিল তার চাইতেও সুগঠিত, সুবিস্তৃত এবং স্থায়ী আকারে। সমাজতন্ত্রপন্থি দলগুলোর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ঐক্যবদ্ধ হবে। যুক্তফ্রন্টের প্রতিটি শাখাই কাজ করবে নিজেদের উদ্যোগে; কেন্দ্র থেকে প্রচারপত্র, সাহিত্য, সংগঠক ইত্যাদি প্রেরণ করা হবে। বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে তরুণদের যুক্ত করার ব্যাপারে। সঙ্গে সঙ্গে সাংস্কৃতিক জাগরণও চাই; পাঠাগার পাওয়া গেলে তাকে ব্যবহার করা যাবে সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্র হিসেবে। কিন্তু কোনো কাজই মতাদর্শিক লক্ষ্যবিহীন হবে না। লক্ষ্যটা হবে দেশে সামাজিক বিপ্লব, যেটা ঘটেনি; কিন্তু যার জন্য দেশের মানুষ প্রতীক্ষায় রয়েছে।

সমাজতন্ত্রীরা সুযোগ হারিয়েছেন ছেচল্লিশে; হারিয়েছেন একাত্তরে। তিপ্পান্ন বছর পরে আবার সুযোগ এসেছে; ধারণ করতে না পারলে শূন্যস্থান পূরণ করবে অন্যরা। সমাজতন্ত্রীদের আওয়াজটা হবে– ঐক্য চাই সমাজ বদলের জন্য। কোটা সংস্কার আন্দোলনটি ছিল কেবল কোটা-বৈষম্য নিরসনে। কিন্তু মানুষ সেটিকে সামাজিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করেছে। এই ঘটনাই বলে দিচ্ছে– রাষ্ট্র ও সমাজে যে পুঁজিবাদী বৈষম্য বিদ্যমান, তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে মানুষ প্রস্তুত। অপেক্ষা কেবল আহ্বানের। বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্ন দাবি নিয়ে যেভাবে আন্দোলন হচ্ছে; অসহিষ্ণুতা দেখা দিচ্ছে চারদিকে; তাতে বুঝতে অসুবিধা নেই– সমাজ পরিবর্তনের সুসংগঠিত আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়বে। আর পুঁজিবাদ যে সংশোধিত হয়ে হিংস্রতা ভুলে মানবিক হয়ে পড়বে– এমন আশা দুরাশা মাত্র। পুঁজিবাদ আগামীতে আরও নৃশংস হবে, যদি না তাকে বিদায়ের আন্দোলন গড়ে ওঠে। পরিণতিতে তাকে বিতাড়িত করে সামাজিক মালিকানার নতুন বিশ্ব গড়ে তোলা না যায়।

আহম্মদ ফজলুর রহমান মুরাদ

লেখক:রাজনৈক বিশ্লেষক