এএইচ এম মান্নান মুন্না:নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে নুর ইসলাম স্বপন’র তিলে তিলে গড়া সুবর্ণা স্টোর নামের ক্ষুদ্র এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি অগ্নি কান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে স্বপনের সব স্বপ্ন ম্লান হয়ে গেছে। ২২বছর ধরে বসুরহাট পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে ফজলুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন আইয়ুব আলী মার্কেটে একটি কসমেটিক ও কোল্ড কর্ণার ব্যবসা দিয়ে চলছিল ৬ সদস্যের একটি পরিবারের জীবন জীবিকা। স্বপ্নের দোকানটির সঙ্গে সারা জীবনের পুঁজি ছিল তার উপার্জনের এক মাত্র অবলম্বন।
গত ৩১ আগস্ট বুধবার রাত আনুমানিক ৩ ঘটিকায় আইয়ুব মার্কেটে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। ওই মার্কেটে ছিল নুর ইসলামের সেই স্বপ্নের দোকান। দোকানে আগুন লাগার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসে এলাকার লোকজনসহ আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে তারা ব্যর্থ হয়। চোখের সামনে দোকানের জন্য মালামাল কিনতে প্রায় ৩৭ হাজার রেখে যাওয়া নগদ টাকা ৩টি ফ্রিজ কসমেটিক সামগ্রিসহ এস এস এর তাক এবং পুরো ডেকোরেশনসহ দোকাটি সম্পূর্ণ রূপে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সব মিলে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার মালামালের মধ্যে থেকে একটা সুতাও বের করতে পারেনি। ওই মার্কেটর স্মৃতি ডেকোরেটরসহ অন্যান্য দোকানগুলো মার্কেট সহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী আবু নাছের বলেন আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পেয়ে ছুটে যান ঘটনাস্থলে তার চিৎকার শুনে এলাকায় লোকজন এসে পুকুর থেকে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। পরে ফায়ার সার্ভিস কোম্পানীগঞ্জ ইউনিটের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।তিনি আরো বলেন, নূুর ইসলাম স্বপনের এ দোকান ছিল তার সংসারের জীবন ধারণের একমাত্র অবলম্বন। অগ্নিকান্ড তাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ইউনিট প্রধান মোহাম্মদ জামিল মিয়া জানান, মার্কেটের ভিতর কোন অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ছিলোনা দোকান ভিতর দাহ পদার্থের কসমেটিক ও প্লাসটিকজাতীয় জিনিসপত্র থাকার কারণে আগুনে তীব্রতা বেশি ছিল তাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হয়েছিল।
ক্ষতিগ্রস্থ নূুর ইসলাম স্বপন বলেন, সারাজীবন যে সহায় সম্বল আমি সঞ্চয় করেছি সর্বনাশা আগুন আমার সব কেড়ে নিয়েছে। এখন আমি ও আমার পরিবার নিঃস্ব। আমি এ বয়সে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার মতো কোন সম্বল আমার অবশিষ্ট নেই। এ ব্যবসা করে ৩ ছেলে, ১ মেয়ে স্ত্রী নিয়ে চলছিল সংসার। বর্তমানে নিঃস্ব হয়ে বৃত্তবান স্বজনদের দ্বারে দ্বারে সহযোগিতার জন্য ঘুরছি । আত্মীয় স্বজনদের দেওয়া অনুদানেই চলছে জীবন-জীবিকা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: যোবায়ের হোসেন এর সঙ্গে এ ব্যাপার আলাপ করা হলে তিনি বলেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ফরমে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করলে সরকার তাকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করবে বলে আমি মনে করি।