কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ‘৪১১ ধারায়‘ গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে এক ব্যাক্তির কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবির অভিযোগ ওঠায় কোম্পানীগঞ্জ থানার এএসআই মো. ইউসুফ আলীকে ক্লোজড করে জেলা পুলিশ লাইনে নেয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মোঃ নাজমুল হাসান রাজিব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এএসআই মোঃ ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় তাকে প্রশাসনিক কারণে জেলা পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। এব্যাপারে তদন্ত করে পরবর্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ থানায় যে কোনো মোবাইল ফোন চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে তা উদ্ধারের দায়িত্বে আছেন এএসআই ইউসুফ আলী। তবে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে বাদি-বিবাদীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এরকম টাকা দাবির একটি কলরেকর্ড এ প্রতিনিধির হাতে এসেছে।
তিন মিনিট ছয় সেকেন্ডের ওই রেকর্ডে আলিম নামের এক ব্যাক্তির কাছে এএসআই ইউসুফ পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। তা না দিলে ওই ব্যক্তিকে ৪১১ ধারায় গ্রেফতারের ভয় দেখান।
রেকর্ডে ভুক্তভোগী ব্যাক্তিকে কাকুতি-মিনতি করে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বাচ্চা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমি এত টাকা দিতে পারবো না।’ তখন গ্রেফতারের ভয় দেখালে ওই ব্যক্তি পনেরশত টাকা দিতে রাজি হন।
এসময় এএসআই ইউসুফ আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘কোথায় পাঁচ হাজার আর কোথায় পনেরশত টাকা, এটা কি বললে হয়। আপনি পেনাল কোডের ৪১১ ধারা পড়ে দেখেন ওটাতে কী লেখা আছে।’
পরে ওই ব্যক্তি আবারও বলেন, ‘আমি মোবাইলটি নগদ টাকা দিয়ে কিনেছি, ওখানে আমি লস দিছি। এখন আমার বাচ্চা হাসপাতালে, আমি এত টাকা আপনাকে কোথা থেকে দেবো?’
তখন এএসআই ইউসুফ আলী বলেন, ঠিক আছে আপনি অসুবিধায় আছেন পাঁচশ একহাজার কম দেন। আমিতো শুধু ট্রেকিং খরচটা চাচ্ছি আপনার কাছে।
ওই ব্যক্তি তখন বলেন, স্যার আমি খুব সমস্যায় আছি আপনাকে দুইহাজার টাকা মিল করে পাঠাচ্ছি। এএসআই বলেন, আপনি বললেই হবে নাকি, এর কমে আমি নিতে পারবনা।
পেনাল কোড অনুযায়ী- ‘যদি কোনো ব্যক্তি অন্যের অজান্তে কোনো জিনিস চুরি করেন তবে ৩৭৯ ধারায় মামলা দেওয়া হয়। আর যদি উক্ত মালামালসহ ওই আসামিকে ধরা হয় বা গ্রেফতার করা হয় তবে ৪১১ ধারায় উদ্ধার দেখানো হয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এএসআই ইউসুফ আলী কল রেকর্ডের কথোপকথনকারী ব্যাক্তি তিনি বলে নিশ্চিত করলেও টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তি চোরাই মোবাইলফোন কিনেছিল। তা উদ্ধারের পর তারাই আমাকে টাকা দিতে চেয়েছিল, আমি নিইনি। ’তবে, পরে কলরেকর্ড শোনানোর পর তিনি এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান বলেন, অভিযোগ ওঠার পর অভিযুক্ত এএসআই ইউসুফ আলীকে মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ সব কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছিল।