করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জনগণের যত্ন কীভাবে নিতে হয়, শেখাচ্ছেন পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা

Date:

বিশেষ প্রতিবেদক :: করোনাভাইরাস যাতে তার পৌরসভায় না ছড়াতে পারে তাই আগেভাগেই এলাকায় স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করেছেন। প্রবাসীদের জন্য পৌরসভায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জায়গা ঠিক করে সেখানে চার বেলা খাবারের আয়োজন করেছেন। ত্রাণ বিতরণ করছেন, যারা আসছে না, তাদের তালিকা করে ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন। সিসিটিভি ক্যামেরায় পৌরসভার মনিটরিং, ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও তৈরি করে সেগুলো যাচাই, ফেসবুকে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা করছেন। তিনি আবদুল কাদের মির্জা। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র। পৌর মেয়র হিসেবে এটি তার তৃতীয় মেয়াদ। এলাকার জনগণের যত্ন কীভাবে নিতে হয়, দেশের অন্য মেয়রদের জন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন তিনি।

৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও করোনার বিরুদ্ধে এই মেয়রের কর্মযজ্ঞটা শুরু হয়েছিল আরও সপ্তাহখানেক আগেই। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সচেতনতা ও স্থানীয়দের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেন তিনি।

পৌরসভার লোকজনের দেখভালের জন্য পিপিইসহ সব সুবিধা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ জনের একটি বিশেষ মেডিকেল টিম তৈরি করেছেন মেয়র। এছাড়াও শুধু পৌরসভা নয়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উন্নয়নে প্রতিদিন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশ সদস্যদের নিয়ে তিনি বৈঠক করেন, তাদের মতামত নেন।

২২ মার্চ থেকে নিয়মিত পৌরসভার সকল সড়কে জীবানুনাশক মিশ্রিত পানি ছিটান । সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এলাকায় ত্রাণের জন্য দেয়া ১০ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় ২৬০০ পরিবারকে ত্রাণ প্রদান করেন। এছাড়াও নিজ অর্থায়নে ২৫০০ পরিবারকে ত্রাণ ও ২০০০ পরিবারকে নগদ টাকা দিয়েছেন তিনি। তার এমন উদ্যোগে পৌরসভার সবাই মুগ্ধ।

https://noakhalitimes.com

২৬ মার্চ থেকে সরকারের ঘোষিত ছুটিতে যাতে সবাই ঘরে থাকে এ জন্য নিজ কার্যালয়ের মনিটরে বসে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি। এছাড়া লকডাউনে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অর্থাৎ সবাই যে বাড়িতে রয়েছে, ফাঁকা শহরের একটি ভিডিওচিত্র তৈরি করে ফেসবুকে আপলোড করেন। ছোট একটি পৌরসভার এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেন সবাই।

স্থানীয়রা জানান, মার্চের ২১ তারিখ থেকে পৌরসভায় ঘর ঠিক করে বিদেশ ফেরত মোট ৩৫ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে তাদের ৩৩ জনকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিজ বাড়িতে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন মেয়র। ১৪ দিন না হওয়ায় বর্তমানে দুইজন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

কোয়ারেন্টাইন থেকে বাড়িফেরা একজন প্রবাসী বলেন, আমরা কোয়ারেন্টাইনে বাড়ির মতোই ছিলাম। আমাদের জন্য উন্নতমানের খাওয়া, ডাক্তার, ওষুধ, টেলিভিশন, পেপার ও ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমাদের সকালের নাস্তা দেয়া হতো, দুপুরে ভাত-তরকারি, বিকেলে নাস্তা, রাতে ভাত-রুটি ও তরকারি। পাশাপাশি প্রতিদিন আমাদের পছন্দের খাবার জিজ্ঞেস করে পরের বেলায় দেয়া হতো।

https://noakhalitimes.com

মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমি জনগণের ভোটে পরপর তিনবার নির্বাচিত হয়েছি। তাদের জন্য দায়িত্ববোধটা এমনিতেই চলে আসে। তাছাড়া একটা মানুষ কত বড় নেতা তার প্রমাণ এই দুর্যোগের সময়ই দিতে হয়। তাই আমি সবসময় তাদের পাশে আছি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজ এলাকা ও নিজের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা একই পরিবারকে দুই-তিন দফা ত্রাণ দিয়েছি। কারণ সামনে রমজান মাস, এরপর ঈদ। স্থানীয়দের অনেক খাবারের প্রয়োজন হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা যেভাবে পারছি ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছি।

এই প্রসঙ্গে মেয়রের ছেলে তাশিক মির্জা কাদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক করোনা মোকাবিলায় আমার বাবা কোম্পানীগঞ্জে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের পরিবার ও আমরা কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো সহযোগিতা করছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এই কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে।

https://noakhalitimes.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

Popular

More like this
Related

আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় যা বললেন আসিফ নজরুল

টাইম আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা...

বাংলাদেশকে বিজেপি ও বিধানসভার বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর হুমকি

টাইম ডেস্ক :পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতা ও বিধানসভার বিরোধী নেতা...

নোয়াখালীতে মৎস্য চাষ প্রশিক্ষণ উদ্ধোধন

নোয়াখালী প্রতিনিধি : ‘দক্ষ যুব গড়ছে দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ এই...