কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চায়না বাহিনীর আতংকে চর এলাহী ইউনিয়নের নারী-পুরুষসহ ব্যবসায়ীরা। আর এ চায়না বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সহ তার ৩ভাই।
চরএলাহী ইউনিয়নে নতুন ঘর-বাড়ি, জায়গা-জমি কেনা-বেচা করতে চায়না বাহিনীর আতংকে থাকেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের চাঁদা না দিলে নদীতে মাছ ধরা জেলেদের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
চায়না বাহিনীর প্রধান হিসেবে কাজ করছে উড়িরচরের সৌরভ বাহিনীর প্রধান সৌরভের ছোট ভাই শাহীন। আগে নেতৃত্ব দিতো সৌরভ। প্রতিপক্ষের হাতে সৌরভ নিহতের পর তারই ছোট ভাই শাহীন এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আড়ালে থেকে চায়না বাহিনীকে ইন্ধন দিচ্ছেন চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। আর চায়না বাহিনীর বিভিন্ন উপ গ্রুপে রয়েছে চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক এর ৩ছোট ভাই খোকন, জাব্বার, কালুসহ বেলাল ও হালিম। পুরো এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তাদের বাহিনীর সদস্যরা। তারা সবাই এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক। যে কোন অনিয়ম তাদের কাছে যেন অলিখিত নিয়ম। চর এলাকার বুকে এ যেন এক আতঙ্কের জনপদের নাম।
সম্প্রতি একটি ঘটনায় ভুক্তভোগীরা জানান, গত ৪ জানুয়ারী চরএলাহী ইউনিয়ন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চরএলাহী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করার জন্য একটি র্যালী নিয়ে আসার পথে উপজেলার হাসপাতাল গেইটে চরএলাহী ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি আবদুর রাজ্জাক অনুসারী আল মাহাদী ফয়সল এর সাথে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক এর সাথে বাকবিতন্ডা ঘটে। এর জেরে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক’র নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উপর অতর্কিত হামলা চালালে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়। আহতরা হলো: আবদুল মালেক (৪০), দেলোয়ার হোসেন (৩৮), আবদুর রহমান (২৪), ফকির আহমদ (২৫), আবু আহমদ রিপন (২৩), হেলাল উদ্দিন (৪০), সাহাব উদ্দিন (৫৫) অনেকেই।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই দিন চায়না বাহীনীর প্রধান শাহীন‘র নেতৃত্বে চরএলাহী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল গণির বাড়ীতে হামলা ও তার ছোট ভাইয়ের দুইটি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময়ে চায়না বাহিনীর সদস্যদের হাতে মহিলা এবং শিশুরাও রক্ষা পায়নি, তাদের হামলার শিকার হতে হয়েছে গণির পুরো পরিবার ।
অনুসন্ধানে জানা যায় ,চায়না বাহিনীর সদস্যরা চর বালুয়াতে হাজার হাজার একর খাস জমি বিক্রি ও তাদের ২টি ট্রলার রয়েছে ওই ট্রলার করে সন্ধীপ থেকে ইয়াবা পাচার করে, এমনকি বামনীয়া নদীর জেলেদের ট্রলার থেকে বড় বড় মাছগুলি নিয়ে অন্যদের বিক্রি করে ফেলে।এ চায়না বাহিনীর সদস্যদের চাঁদার টাকা জমা হয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের পকেটে। এ টাকায় এখন সে রাতা-রাতি কোটিপতি।
চরএলাহী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আবদুল গণি থানায় মামলা দায়েরের পর মামলার প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, আবুল কালাম, আল মাহাদী ফয়সাল, রাজীবকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এমন সব ভয়ঙ্কর অপরাধের চিত্র পাওয়া গেছে। যে কয়েকজন নাম উঠে এসেছে সবাই এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক। তাদের বিষয়ে স্থানীয়রা নানা তথ্য দিলেও আতঙ্কে কেউ নিজের নামটি প্রকাশ করতে চান নি।
এবিষয়ে চায়না বাহিনীর প্রধান শাহীনের সাথে আলাপ করলে সে ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন না বলে জানায়। অপর দিকে এঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।