কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সারা দেশে বসতঘর প্রদান করা হলেও তালিকা থেকে বঞ্চিতদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। সমাজের এমন বঞ্চিতদের খোজ নেয়ার দায়ীত্বশীল অভিভাবকের আজ বড়ই অভাব। দেশের যেই মুহুর্তে বৃষ্টি কামনায় মানুষের আর্তনাদ ঠিক সেই মুহুর্তে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাসরত সর্বহারা হওয়ার ভয়ে নূর জাহান ও কামাল পাশা বৃষ্টিবিমূখ প্রার্থনার কথা শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশি প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম মিরন।
বলছিলাম নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সর্বহারা নূর জাহান বেগম ও কামাল পাশা নামের দুই বঞ্চিত বয়োবৃদ্ধের কথা। শনিবার (৮মে) সকাল ১১ টায় উভয়কে সম্পূর্ণ নতুন ঘর বুঝিয়ে দেন প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম মিরন।
চরকাঁকড়া ৬নং ওয়ার্ডের গুড়া গাড়ী হাজীর বাড়ীর নূর জাহান বেগম (৬৫) দীর্ঘ ৩৭/৩৮ বছর পূর্বে স্বামীকে হারিয়ে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন এঁকে থাকলেও ছেলে-মেয়ের অবহেলায় একাকিত্বের আল্পনায় গুনছেন মৃত্যুর প্রহর। অপর দিকে প্রতিষ্ঠিত ছেলের অবহেলায় প্রতিবন্ধি স্ত্রীকে নিয়ে সংসার ইউপি অফিস সংলগ্ন এলাহী বক্স ব্যাপারী বাড়ীর কামাল পাশা’র (৭০)।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গুড়া গাজী হাজ্বী বাড়ীর নূর জাহান বেগম ও একই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের এলাহী বক্স বেপারী বাডীর কামাল পাশা দির্ঘদিন যাবত জরাজীর্ণ ঘরে রোদ, বৃষ্টিতে ভিজে দিনযাপন করছেন এই দু’টি পরিবার। স্বজন ও প্রতিবেশিদের অবহেলা ও অনাদরে বেঁচে থাকার যুদ্ধে যখন ওরা ক্লান্ত ঠিক সেই মূহুর্তে মানবতার টানে পাশে দাঁড়ালেন একই ইউনিয়নের বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী, স্পেন প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম মিরন। সম্পূর্ন নিজ অর্থায়নে দু’জনকে পৃথক পৃথক স্থানে টিন শেড় বসতঘর নির্মাণ করে দেন। এছাড়াও কামাল পাশাকে ব্যবসা করার পরামর্শ ও ব্যবসায় সহযোগিতার আশ্বাসও দেন জাহাঙ্গীর অলম মিরন।
জাহাঙ্গীর আলম মিরনের এমন ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ নূর জাহান, কামাল পাশা সহ এলাকাবাসী। এই প্রতিনিধির সাথে আলাপচারিতায় আবেগ উৎফুল্ল হয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি নূর জাহান বেগম।
কেন এমন সামাজিক কাজে এগিয়ে আসলেন জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম মিরন বলেন, প্রবাসে থাকলেও সামাজিক কাজে আমি দির্ঘদিন যাবত জড়িত। দেশে আসলে প্রতিবেশীদের কষ্টগুলো হৃদয়ে নাড়া দেয়। মানুষ হিসেবে আমার দায়ীত্ববোধ থেকে চেষ্টা করি অবহেলিত মানুষের জন্য কিছু করার। শুধু ঘর নির্মাণ নয় সমাজে বেকার যুবকদের সাধ্যানুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, যুবকদের মাদকাসক্ত ও নেশাগস্ততা থেকে বিরত রাখতে খেলা-ধুলার প্রতি আগ্রহ তৈরি করাসহ সামাজিক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করি।