মোহাম্মদ আমান উল্যা, চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালী চাটখিলে বাইশসিন্দুর কাজী আহমদ উল্লাহ মেমোরিয়াল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোমলমতি শিশুরা ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় ক্লাস করছে। শিক্ষিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে কাজি আহমদ উল্লাহ সাহেবের হাত ধরে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে এটাকে জাতীয়করণ করে এর নাম হয় বাইশসিন্দুর কাজী আহমাদুল্লাহ মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এটি নামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হলেও এর দুঃখ দুর্দশার অন্ত নেই। পূর্ব পাশের ভবনটি একেবারেই জরাজীর্ণ এবং পরিত্যক্ত। মাঠের দক্ষিণপাশ একটি দোচালা টিনশেড থাকলেও তা ভাঙ্গে পড়ে আছে। তিনটি কক্ষ হওয়া অফিস রুমেই দেওয়া হচ্ছে পাঠদান। বাকি দুটিতে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। রুমগুলো একেবারেই ছোট। প্রত্যেকটি রুমের সামনের দিকে কিছু পুরনো ভাঙ্গা বেঞ্চ স্তুপ করে রাখা আছে। এই বেঞ্চগুলো রাখার বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই।
এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০২ জন। প্রধান শিক্ষিকা বিলকিস আক্তার সহ মোট ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মোস্তফিজুর রহমান জানান, ১৯৯৪ সালে এখানে পূর্ব পাশের ভবনটি স্থাপিত হয়েছিল। তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি একেবারে জরাজীর্ণ এবং ব্যবহারের অনুপযুক্ত হওয়ার কারণে ২০১৫ সালে এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় এবং দক্ষিণ পাশে চাটখিল শিক্ষা অফিসের তত্ত¡াবধানে একটি টিনশেড তৈরি করে দেওয়া হয়। তবে সেই টিনশেডেও এখন পাঠদানের মত কোন অবস্থা নেই। ছোট ছোট তিনটি কক্ষের মধ্যে একটি অফিস কক্ষ হিসেবে ওপর দুইটি পাঠদান করানো জন্য রয়েছে।
তাই ডাবল শিফটে পরিচালনা করা হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। মর্নিং শিফট সকাল ৯ টা থেকে ১১ঃ৩০ টা পর্যন্ত এবং ডে-শিফট ১২টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। মর্নিং শিফটের প্রয়োজনীয় কক্ষের অভাবে প্রাক-প্রাথমিকের পাঠদান অফিস রুমের মাটিতে বসিয়েই হচ্ছে। তাছাড়াও ওয়াশরুম ও টয়লেট নেই বললেই চলে। ভালো পাঠদান হলেও শুধুমাত্র পরিবেশের কারণে অনেক অভিভাবকই তাদের বাচ্চাকে এখানে ভর্তি না করে বেসরকারি কেজি স্কুলে ভর্তি করাতে দেখা যাচ্ছে।
চাটখিল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এরকম একটা অবহেলিত জরাজীর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাটখিলে দ্বিতীয়টি আর নেই। এত কিছুর পরেও বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান ভালো। আমি দেখেছি ভবন নির্মাণের পূর্বের লিস্টে এই বিদ্যালয়ের নাম নেই। বর্তমানে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া জানান, সম্প্রতি সোশাইল মিডিয়ায় এই স্কুল ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ বলে আমার দৃষ্টিগোচর হয়। আমি তাৎক্ষনিক উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি অবগত করেছি এবং মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করেছি। যাতে দ্রæত একটি নতুন ভবনের ব্যবস্থা করা হয়।