তাজভীর’র ভুল খৎনার সময় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয় কুমার ছিলেন না

Date:

প্রতিবেদক :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্ত্রোপচারে দক্ষতার অভাবে খৎনায় ভুল চিকিৎসাসেবায় শিশুর লিঙ্গের পিনিস কেটে ফেলায় শিশুটির মৃত্যুঝুঁকির মতো পরিস্থিতি তৈরী হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয় কুমার দে এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে এ প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বিজয় কুমার জড়িত এমন কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। অপরদিকে ভুক্তভোগী পরিবার থেকে বিজয় কুমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসেনি। বিজয় কুমার দে ওই দিন দুপুর ২ টা পর্যন্ত অফিস করেছেন তিনি পালিয়ে যাননি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘটনার দিন ডিউটি ছিল মেডিকেল অফিসার ডা: লায়লা সবরিন শাহরিন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয় কুমার দে ও এমএলএসএস আহছান উল্লা। তবে এসময়ে বিজয় কুমার দে অন্য কক্ষে কাজ করে ছিলেন ।

এমন সময় ভুক্তভোগী শিশু আল নাহিয়ান তাজভীর পিতা আলমগীর হোসেন তার ছেলেকে খৎনা করার জন্য জরুরী বিভাগে আসেন অপর দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপসহকারী মেডিকেল আবু নাছেরের জন্য অপেক্ষা করছেন। আবু নাছের আসার আগে এম এল এস এস আহছান উল্লাহ শিশু আল নাহিয়ান তাজভীর বাবা আলমগীর হোসেন কে জরুরী বিভাগে ডেকে শিশুকে রেখে শিশুর বাবা আলমগীর হোসেন কে জরুরী বিভাগ থেকে বের করে দেন। পরে মেডিকেল এসিস্টেন্ট ( শিক্ষানবিশ) সৌরভ ভৌমিক শিশু আল নাহিয়ান তাজভীরকে খৎনার কাজ শুরু করেন। এমন সময়ে শিশুর পিনিস অংশ কেটে ফেলে এতে শিশুটির অতিরিক্ত রক্তক্ষণের ঘটনা ঘটে।

শিশু তাজভীর পিতা আলমগীর হোসেন জানান, আমি জরুরী বিভাগে আমার ছেলেকে খৎনা করার উদ্দেশ্যে অপেক্ষা করছি ডাক্তার আবু নাছের জন্য। এমন সময় ডাক্তার পরিচয় দেয়া সৌরভ ভৌমিক ও হাসপাতালের দারোয়ান আহছান উল্লা আমার ছেলের কাটা কাটি শুরু করে। এসময়ে আমার বাচ্চা চিৎকার শুরু করে আমি তার চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি আমার ছেলের প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং রক্তে ভ্যাট ভিজে গেছে এমন সময়ে আমাকে দেখার সুযোগ করে না দিয়ে তারা আমাকে দু’জনে ধরে রেখেছে তখন আমার চিৎকারে আশ পাশ থেকে লোকজন আসলে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট সৌরভ ভৌমিক ও দারোয়ান (এমএলএসএস) আহছান উল্লাসহ তিন জন পালিয়ে যায়। শিশুর পিতা আলমগীর হোসেন এ ঘটনায় জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্ত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল বিজয় কুমার দে’র সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ওই দিন জরুরী বিভাগের আমার ডিউটি থাকলেও আমি শিশু আর নাহিয়ান তাসভীর এর খৎনা সাথে জড়িত ছিলাম না আমি তাজভীরকে খৎনা করিনি আমি অপর কক্ষে কাজে ব্যস্ত ছিলাম। শিশুটিকে খৎনা করেছে অপর মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট সৌরভ ভৌমিক ও সহযোগিতায় ছিল এমএলএসএস আহছান উল্লাসহ অপর একজন। আমি পালিয়ে যায়নি ওদিন দুপুর ২ টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগে ডিউটি করে বাড়ি ফিরছি। কখনো আমি পালিয়ে যায়নি আমার বিরুদ্ধে অপ প্রচার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শিশুর জ্যাঠা শেখ ফরিদ জানান, কথিত ডাক্তার আমার ভাইয়ের ছেলে আল নাহিয়ান তাসভীরকে অদক্ষ ডা: খৎনা করার সময়ে অস্ত্রোপচার ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় সে বর্তমান উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে । তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমারা চিন্তিত। যারা এ শিশুটিকে ভুল খৎনাকরে মৃত্যুঝুঁকির মতো পরিস্থিতি তৈরী করেছে আমি কোম্পানীগঞ্জ থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। অভিযুক্তরা হলো মেডিকেল অফিসার ডা: লায়লা সাবরিন শাহরিন ও মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট (শিক্ষানবিশ)সৌরভ ভৌমিক এবং এমএলএসএস( দারোয়ান) আহছান উল্লা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয়ের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ দেয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে অভিযোগকারী শেখ ফরিদ বলেন,ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিল আমি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি,মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট বিজয় কুমার দে খৎনা করানোর সময় ছিল না এবং আমরা তাকে তখন দেখিনি। তিনি আরো বলেন এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে তদন্তে অন্য কেউ জড়িত থাকলে সেটি তদন্ত কমিটির ব্যাপার আমি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ সেলিম এ প্রতিবেদক কে জানান, এ ঘটনায় দু’ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্ট বিভাগীয় ব্যবস্থা নিবেন। জরুরি বিভাগে খৎনা করা তাদের কাজ না, তাদের কাজ হচ্ছে কাঁটা- সিটার সেলাই করা, জরুরী বিভাগে খৎনার কাজ করা নিষেধ রয়েছে খৎনা করবে হাসপাতাল ম্যানেজমন্টের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অপারেশন বিভাগ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয় কুমার কে কেন? শাস্তি মূলক সেন্টমার্টিনে বদলী করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ডা: সেলিম বলেন, তাকে শাস্তি মূলক বদলী করা হয়নি জনস্বার্থে তাকে ওখানে বদলীর আদেশ দেয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

Popular

More like this
Related

নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেপ্তার ৫

সদর (নোয়াখালী) সংবাদদাতা :: নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক...

কোম্পানীগঞ্জে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে শ্রেষ্ঠ হয়ে পুরস্কার পেলেন যারা

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষে...

কোম্পানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলা অনুুষ্ঠিত

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ...

কোম্পানীগঞ্জে পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় বর্বর স্বামীর নির্যাতনের শিকার স্ত্রী হামিদা

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :যৌতুক ও নারীলোভী স্বামীর নির্যাতনে নোয়াখালী সদর...