নুর উদ্দিন মুরাদ, বিশেষ প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে কোন দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র (চিলিং পয়েন্ট) না থাকার কারণে দুধের ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত ও দুধ বিক্রয়ে বিপাকে পড়েছে খামারিরা। প্রতিদিন প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৯লিটার দিনে দুধ উৎপাদন হলেও সময়মত বিক্রি না হওয়াতে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া লকডাউনে এখানে দুধ বিক্রি কঠিন হওয়াতে এ খাতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন স্থানীয় খামারিরা।
উপজেলার পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে নদী ভাঙনে নিঃস্ব ভূমিহীন পারিবারগুলো নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পরিবার ভিত্তিক অসংখ্য দুগ্ধ খামার গড়ে তুলেছে। কিন্তু দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভি পালনকারী পরিবারগুলো এখন চরম বিপাকে পড়েছে।
উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের রহিম মোল্লা জানায়, তিনি দুটি বিদেশি গাভি পালন করছেন। প্রতিদিন তার খামারে দুধ উৎপাদন হয় ৯ থেকে ১১ লিটার। একই উপজেলার চরপার্বতী ইউনিয়নের তরুণ উদ্যোক্তা মো. ওমর ফারুক জানান, তার খামারে ১৪ টি বিদেশি গাভি থেকে প্রতিদিন ৫০-৬০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়ে থাকে। উপজেলার নজরুল ইসলাম জানান, তার খামারের ছোট বড় ১৭টি গাভি থেকে প্রতিদিন ৪০-৫০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়।
স্থানীয় খামারীরা জানান, বেসরকরিভাবে ঋণ ও বিভিন্ন ভাবে অর্থায়নের মাধ্যমে গাভি পালনে আমরা পরিবার ভিত্তিক খামার গড়ে তুলি। এতে অনেকখানী স্বাবলম্বী হয়ে উঠি। কিন্তু চলমান লকডাউনের কারনে দুধের বাজারজাত করতে পারছি না। লকডাউনে স্থানীয় হাট বাজার, হোটেল ও বাসাবাড়ি বা দধি দোকানে উৎপাদিত দুধ বিক্রি হয় না। এতে গাভি পালনের খরচ উঠাতে কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া উৎপাদিত দুধ বিক্রির নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় অসংখ্য দুধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদের এক হিসাব অনুযায়ী জানা যায়, উপজেলায় বড় খামারি রয়েছেন ৭৪ জন, মাঝারি খামারী রয়েছেন ৯৯জন ও ছোট খামারী রয়েছেন ৩৮১ জন। উপজেলায় বর্তমানে দুধ উৎপাদন হয় দিনে প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮০ লিটার।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান, খামারিরা যেন দুধের ন্যায্য মূল্য পায় এবং সরকারের সুযোগসুবিধাগুলো নিতে পারে এ জন্য মিল্ক ভিটা লিমিটেডের একটি চিলিং পয়েন্টে স্থাপন করা হচ্ছে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশিরহাটে। কি কারনে তা এখনো চালু হচ্ছেনা, জানিনা। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছি। যদি সেটি চালু হয় তবে এ সমস্যা অনেকটা লাগব হবে।