নিউজ ডেস্ক :: ‘পুতুল সরকার’ হিসেবে কাজ করছে আওয়ামী লীগ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপি এ সভার আয়োজন করে। ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আধিপত্যবাদের পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা শুধু তাদেরই এজেন্ডা এখানে বাস্তবায়িত করছে।’
তিনি বলেন, ‘তাদের সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করা-এটাই হবে আমাদের উদ্দেশ্য-লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে আসুন সবাই একসঙ্গে কাজ করি।’
বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা শুরু হলো। দেশের ২-৩টা প্রখ্যাত পত্রিকা একই সুরে কথা বলতে শুরু করলো। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা লক্ষ্য করলাম যে, বেশ কয়েকটি দেশের ডিপ্লোমেটরা টুইজডে নামে একটি ক্লাব তৈরি করলো। সেই ক্লাবে আবার একটা আন্দোলন শুরু হলো মিলিতভাবে যে যোগ্য প্রার্থীর… । সবই একই সূত্রে গাঁথা ছিল যে, বিএনপি যেহেতু বাংলার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে, স্বাধীন সার্বভৌম স্বতন্ত্র অবস্থানে আছে। এই সরকার যদি থাকে, তাদের প্রতিনিধিরা যদি সংসদে বসে তাহলে তাদের যে লক্ষ্য তা এখানে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।’
ফখরুল বলেন, ‘এরই ফলে আমরা দেখেছি, তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিভিন্ন নাটক তৈরি করেছে, বিভিন্নভাবে আমাদের এখানে ১/১১ সেনা সমর্থিত সরকার তৈরি হয়েছে, তারপর দেখি যে, দুই বছর সম্পূর্ণ অসাংবিধানিকভাবে সরকার নিয়ে গেছে এবং এরপর একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেছে যে নির্বাচনটা ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একবারের জন্যও মাথা নত করেনি।’
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য রাখেন।
সভায় মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এ সরকারের ভিত্তি হচ্ছে মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন। ভালোভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখবেন মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের ধারাবাহিকতায় চলছে এই সরকার।’
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মুক্ত করতে হবে। উনার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি, দেশের গণতন্ত্রের মুক্তি। আসুন সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে একেবারে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কাজ করি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিপ স্টেট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এটাকে সরকার বলা যায় না, এটাকে একটা শাসন বলতে পারি। ১/১১ থেকে শুরু করে সেই ডিপ স্টেট অব্যাহত রয়েছে। এটা আরও ডিপার হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ডিপ স্টেটের বিরুদ্ধে আমাদেরকে যদি জয়ী হতে হয়, তাহলে ভিন্নভাবে চিন্তা করতে হবে। তাদের কাজগুলো সারফেইসে নিয়ে আসতে হবে। প্রতিনিয়ত দেশের ভেতর এবং বাইরে তাদেরকে আমাদের পুরোপুরি এক্সপোজ করতে হবে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এখন আমি দলের কথা বলছি না, আমি বলছি যে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে এখনো অনেক বেঈমান রয়েছে যারা শেখ হাসিনা সরকারকে টিকে থাকতে সাহায্য করছে। আমাদের সেদিকেও একটু খেয়াল রাখতে হবে। দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সুসংগঠিত করে আমরা আন্দোলনে যাব। কর্তৃত্ববাদী সরকারকে আন্দোলন ছাড়া সরানো যাবে না, দলকে সংগঠিত করার প্রয়োজন রয়েছে।
আবদুল মঈন খান বলেন, ‘দেশনেত্রীর রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বার বার একটি জিনিস প্রমাণিত হবে সেটা হচ্ছে তার আপসহীন রাজনীতি। তিনি দেশের স্বার্থের বিষয়ে কোনো দিন আপস করেননি-এটাই হচ্ছে সত্যি এবং দেশের মানুষ এটাই আজও বিশ্বাস করে।’