কোম্পানীগঞ্জের চরাঞ্চলে বিষটোপ ও ফাঁদ পেতে অতিথি পাখি শিকার

Date:

নুর উদ্দিন মুরাদ :: প্রতি বছরের মতো এ বছরও শীতের শুরুতে সুদূর হিমালয় ও সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিনাঞ্চলের বিস্তৃর্ন চরাঞ্চল, আশপাশের জলাশয়, খালে-বিলে আসতে শুরু করেছে। এছাড়াও অগ্রহায়নের শুরু থেকে ধানক্ষেতে জমে থাকা পানিতে মাছ শিকার করে বিভিন্ন প্রজাতির বক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কানিবক ও জটলা বক। আর স্থানীয় শিকারিরা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাঠে নেমে মেতে উঠেছে মাছ শিকারে আসা বক ও অতিথি পাখি নিধনের মহোৎসবে।

চর গাংচিলে অতিথি পাখি শিকার যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনও কার্যকারী ভূমিকা নিচ্ছে না। নভেম্বর মাসের শুরু থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অসংখ্য অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে। এর মধ্যে বালি হাঁস, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালি কাস্তে চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাদা খোঁচা, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া অন্যতম।

শিকারিরা রাতে এবং দিনে নিধন করা পাখি অবাধে বিক্রি করছে পাশ্ববর্তী এলাকা, মৎস খামারীদের কাছে সহ আশপাশের বিভিন্ন স্থানে।

বিশিষ্ট কলামিষ্ট গোলাম সারোয়ার বলেন, পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভাবর্ধন করে না, ভারসাম্যও রক্ষা করে। পোকামাকড় খেয়ে এরা কৃষকের উপকার করে। তাছাড়া অতিথি পাখির সাথে আমাদের অতিথির মতো আচরন করা উচিত। অতিথি পাখি হত্যা খুব খারাপ মানসিকতা। আসলে, আইন থাকলেও পাখি নিধন বন্ধে তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যায় না।

উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় বিলাঞ্চলে শত শত সাদা বক ও পানকৌড়ি এখানে আশ্রয় নিয়েছে। মার্বেল গুলাল ও বিষ দিয়ে শিকার করছে এসব অতিথি পাখি। এছাড়াও আশ্রয়ে আসা অতিথি পাখি শিকারে জালের ফাঁদ তৈরি করেছে কোথাও কোথাও সেক্ষেত্রে তাড়া খেয়ে জালে ও ফাঁদে পড়লে পাখিগুলোকে খাঁচায় আটকানো হচ্ছে।

পাখি শিকার করে খাওয়া ও বিক্রির কথা স্বীকারও করেছেন গাংচিল এলাকায় পাখি শিকারি জাহিদুল। তিনি জানান, শীত মৌসুমে অতিথি পাখির আগমন বেশি। তাই এই সময় তারা অনেকে পাখি শিকার করে থাকেন এবং ওইসব পাখি নিজেরা খায় এবং অন্যদের কাছে বিক্রি করেন।

উপজেলার চর কলমি এলাকার বাসার বলেন, আমি প্রায় এখানে টহল দেই। শিকারীরা বিষের টোপ দেয় যে কিছু পাখি খেয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম হওয়া দেখলে জবাই করে বাড়ি নিয়ে যায়। তবে বেশীর ভাগ সময় পথে মানুষ দেখে কিনে নিয়ে যায়। এসব পাখির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই কোনমতে পেলে বিক্রি করতে সমস্যা হয় না।

এবিষয়ে ইউএনও ফয়সল আহমেদ বলেন, বন্যপ্রাণী আইনে দেশি ও অতিথি পাখি এবং প্রাণী শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শিকারিদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

Popular

More like this
Related

কৃষি জমির মাটি কাটায় লাখ টাকা জরিমানা, মুচলেকা দিল ব্যবসায়ী

মোহাম্মদ আমান উল্যা, চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীর চাটখিলে কৃষি জমির...

চাটখিলে নবাগত ইউএনও এর মতবিনিময়

মোহাম্মদ আমান উল্যা, চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর চাটখিল...

কোম্পানীগঞ্জে আইএইচ আরসি’র ঈদ প্রীতি ও অভিষেক অনুষ্ঠান

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন (আই এইচআরসি)...