Home Blog Page 18

আইনজীবী হত্যা: যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ও আজহারী

0

টাইম রিপোর্ট :
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিহত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে অন্তবর্তী সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান তিনি।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলামের নৃশংস হত্যাকারীদের দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা সরকারের আশু কর্তব্য। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া উগ্রদের থামানোর ব্যাপারে কোনোরূপ দ্বিধা করা যাবে না।

একইসঙ্গে সর্বস্তরের মুসলিমদের সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের এবং কোনো প্রকার চক্রান্তের ফাঁদে পা না দিতে অনুরোধ জানান তিনি।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, দেশের সকল ধর্মের দায়িত্বশীল ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিবর্গকে বলব, আপনারা নিজ নিজ ধর্মের অনুসারীদের শান্ত ও সুশৃঙ্খল থাকার আহ্বান জানান। কোনো কারণে এই দেশ যদি অশান্ত হয়, তবে ক্ষতিগ্রস্ত আমরা সবাই হব।

এদিকে নিজের ফেসবুকে দেশের চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মিজানুর রহমান আজহারী। তিনি বলেন, কোন উসকানিতে পা দেয়া যাবে না। বিজয় আমাদেরই হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি লিখেন, সম্ভবত দেশকে অস্থিতিশীল করার সর্বশেষ ট্রাম্পকার্ড খেলা হচ্ছে। দয়া করে সবাই শান্ত থাকুন। কোন উস্কানিতে পা দেয়া যাবে না। বিজয় আমাদেরই হবে ইনশাআল্লাহ।

একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে চট্টগ্রামের আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানান আজহারী।

নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফ চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম জালাল উদ্দিন। সাইফুল ইসলাম ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন পান। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।

আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

0

টাইম রিপোর্ট :
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা জনগণকে শান্ত থাকার এবং অপ্রীতিকর কার্যকলাপে অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে চট্টগ্রামসহ আশেপাশের সব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেন।।

অন্তর্বর্তী সরকার যেকোনও মূল্যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ও সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে প্রেস উইয়ের বার্তায় উল্লেখ করা হয়।

পুলিশের সঙ্গে চিন্ময় অনুসারীদের সংঘর্ষ, আইনজীবী নিহত

0

টাইম ডোস্ক :

চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।
এর আগে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।চট্টগ্রামে ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া লালদিঘিতে সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল ছাড়াও আহত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯ জন। তবে এ ১৯ জনের সবাই আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মন্নান।

তিনি বলেন, আহতদের কেউ মাথায় আঘাত পেয়েছেন, কেউ হাতে, কেউ শরীরের অন্যান্য জায়গায়। তাদের হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরত সনাতনীরা আদালত চত্বরে প্রায় তিন ঘণ্টা পুলিশের প্রিজনভ্যান আটকে রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ করে। এরপর তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে অবস্থান নেন। এর মধ্যে আদালত প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে দুপক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার লিয়াকত আলী বলেন, একজন নিহত হয়েছেন। তবে কীভাবে সেটি এখনো জানা যায়নি।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আদালত এলাকায় আইনজীবীরা বিক্ষোভ করছিলেন। বুধবার (২৭ নভেম্বর) কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তারা।

মুছাপুরে স্লুইসগেট পূণনির্মান না হওয়ায় তিন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হচ্ছে

0

কোম্পানীগঞ্জ সংবাদাতা :

কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুরে স্লুইসগেট পূণনির্মান না হওয়ায় নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জ, সোনাগাজী ও দাগনভূঞার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা মুছাপুরে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি-ঘর। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় প্রবল পানির স্রোতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর স্লুইসগেট ভাঙনের কারনে এবং তা পূণঃনির্মান না হওয়ায় নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত হাজার হাজর ঘর-বাড়ি এবং বিস্তীর্ণ ফসলী জমি।

হুমকির মুখে পড়েছে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজী দাগনভূঞা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- নদীর তীব্র ভাঙনে মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের পুরো গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। আজ যেসব বাড়ী-ঘর, গাছপালা ও স্থাপনা দেখা যাচ্ছে সেটি আগামীকাল আর দেখা মিলছে না। এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে নদীর তীব্র ভাঙনকবলিত এই এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১শ বছরের পুরনো বাড়ীও উত্তাল নদীর আগ্রাসী ভাঙনে আজ বিলীন।

মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, পারিবারিক কবরস্থান, মক্তব ও জনতা বাজারের দোকান-পাট ও বাড়ী-ঘর বিলীন হয়ে গেছে। অনেকের মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনদের কবর দেয়া হয়েছিল বসতভিটার পাশে। নিজের পরিবার ও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিলেও নিতে পারছেন না স্বজনদের কবরগুলি। মা-বাবার শেষ স্মৃতি হিসেবে থাকা সেই কবরটি নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে।

চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানি ছল ছল করলেও বুকের মাঝে কান্না ধরে রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই নদীর তীব্র ভাঙন কবলিত এই এলাকার মানুষের। সহায় সম্বল হারিয়ে কেউ রাস্তার পাশে, কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এভাবে নদী ভাঙ্গায় ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শত-শত হেক্টর রোপা আমন ধানক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, কৃষকেরা মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন-রাত। অপর দিকে মুছাপুর রেগুলেটরে যাওয়ার প্রধান সড়কটির বেশীর ভাগ অংশ ভেঙে গেছে। বনবিভাগের সারি-সারি ঝাউগাছের বাগানটিরও

অনেক অংশ ভেংগে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, গাছপালা ও মাছের ঘের। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ, দাগনভূঞা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। স্থানীয়রা জানায়, রেগুলেটর না থাকায় প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা পর পর দুই বার জোয়ার আসে। এসময় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর, চরহাজারী, চরপার্বতী ও ফেনীর সোনাগাজীর চরমজলিশপুর ও চরদরবেশ ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামে। এতে প্রতিদিন ভাঙছে এসব ইউনিয়নের অনেক এলাকা গুলো। চলমান ভাঙনের কবলে ইউনিয়নগুলোর আরও কয়েকটি এলাকাও রয়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে আশপাশের মাছের প্রজেক্ট ও ফসলি জমিগুলোতে। যার ফলে বিপর্যয় ঘটছে মৎস্য ও কৃষিতে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে আমনের খেত, ভেসে গেছে অর্ধশত মাছের পুকুর ও প্রজেক্টের মাছ। লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় মারা যাচ্ছে মিঠা পানির মাছ।
নদী ভাঙনরোধ বন্ধ না হলে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজীর অনেক এলাকা বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিলীন হতে পারে ১ হাজার হেক্টর জমি, যেখানে চাষ হতো আমন, আউশ, বোরো, সরিষা, তরমুজ, ডাল, সূর্যমুখী, শাক-সবজি। সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কোটি কোটি টাকার কৃষি ও মৎস্য খাত।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, রেগুলেটর নদীতে বিলীন হওয়ার পর থেকে একের পর এক স্থাপনা, বাড়িঘর ও কৃষিজমি নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এ ভাঙন চলমান থাকলে কোম্পানীগঞ্জ ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দেশের মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন তারা।

তারা আরও বলেন, বন্যায় এমনিতেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। নদী ভাঙনের কারণে এখন ঘণ্টায় একটি করে পরিবার তাদের বাড়ি-ঘর হারাচ্ছে।ভেঙে যাচ্ছে মসজিদ, রাস্তা-ঘাট। নদী ভাঙন রোধে বাঁধ গুলো সোজা করা না হলে এখানকার অন্তত ১০০০পরিবার ভিটেমাটি সব হারাবে। আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের বাড়ি-ঘর, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজও রাস্তা-ঘাট বাঁচাতে চাই। নদী ভাঙন রোধ করতে ছোট ব্লক ও ছোট জিয়ো ব্যাগ ব্যবহার করা হলেও কাজের কাজ হচ্ছেনা। স্থানীয়রা জানায়, বড় ব্লক এবং বড়

জিয়োব্যাগ ফেলা হলে হয়তো নদী ভাঙন রোধ করা যেত। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রেগুলেটরে ভাঙন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ একর আমন ধানের জমি ও কয়েক একর শীতকালীন সবজির খেত নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এ ভাঙন যেভাবে অব্যাহত আছে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষি খাত।

মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোজিনা বেগম বলেন, গত ২০ বছর আগে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে গুচ্ছগ্রাম থেকে মুছাপুরে আসেন। স্বামী, মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে একটি দোচালা টিনের ঘর করে কাটছিল তার সংসার। মুছাপুর রেগুলেটরের পাশে থেকে মোকাবিলা করেছেন রিমাল, অসনি ও সিত্রাং-এর মতো কয়েকটি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। কোনোটিতে নিজের ভিটে-মাটি ছাড়তে হয়নি রোজিনাকে।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফেনী থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত বন্যার পানির চাপে ভেঙে যায় রেগুলেটরটি। আর এতেই কপাল পুড়ে রোজিনাদের। রেগুলেটর ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণ পর নদীগর্ভে বিলীন হয় তার মাথা গোঁজার একমাত্র বসতঘরটি। নদী ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সঠিক তালিকা করে পুনর্বাসন করার দাবি জানান তিনি।

মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুরের নদী ভাঙন রোধে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। যার ফলে গত ২৬আগস্টের পর থেকে বিলীন হয়েছে ওই জনপদের বড় একটি অংশ। ড্রেজিং শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে, তবে ড্রেজিং পরবর্তী আবারও রেগুলেটর স্থাপন করে স্থায়ী সমাধানের দাবি এলাকাবাসির।

সরকারের একাধিক উপদেষ্টা মুচাপুর রেগুলেটর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদী ভাঙন রোধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ছোট ফেনী নদীর জনতা বাজার অংশে ড্রেজিং কাজের শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে স্বস্তি ফিরেছে এ নদী তীরবর্তী ৪টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের মাঝে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহরাজ জানান, এ ড্রেজিং এর কাজের মাধ্যমে নদীর পানির প্রবাহ পরিবর্তনের পাশাপাশি মাঝ নদী দিয়ে পানি নামা শুরু করলে দুই পাশের আরও কয়েক লাখ মানুষের বসত ঘর রক্ষা হবে। একই সাথে ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পুনরায় আরও একটি রেগুলেটর স্থাপনের দাবি তাদের।

উল্লেখ্য, গত ২৬আগস্ট ফেনী থেকে নেমে আসা বন্যার পানির তীব্র চাপে ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর রেগুলেটর। তার আগে বন্যার পানি দ্রুত নামার জন্য খুলে দেওয়া হয় রেগুলেটরের ২৩টি গেট (ভেন্ট)। রেগুলেটরটি নদীর পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় পর থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। জোয়ার ভাটার প্রভাবে ভাঙতে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, মসজিদ, দোকান-পাট ও ফসলি জমি। এখনও প্রতিনিয়ত বিলিন হচ্ছে আরও

অনেক নতুন নতুন জায়গা। পানির স্রোতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ফেনীর দাগনভুঁইয়া, সোনাগাজী ও কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট উপজেলার মানুষের মাঝে দেখা দেয় আতঙ্ক। এখনো যাদের ঘর-বাড়ি টিকে আছে তারাও আতংকে দিন কাটাচ্ছেন এই বুঝি বসবাসের শেষ সম্বলটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হলো। প্রসংগত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, নতুন ডাকাতিয়া ও পুরাতন ডাকাতিয়া ছোট ফেনী নদী নিষ্কাশন প্রকল্পের অধীনে মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরে ২০০৬ সালে

নোয়াখালী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একান্ত প্রচেষ্টায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রেগুলেটরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় ২০০৯ সালে শেষ করা হয় ২৩ ভেন্টের মুছাপুর রেগুলেটরের কাজ। ১.৩০ লাখ হেক্টর জমি রক্ষার্থে এ প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২.৩৫ কোটি টাকা। তবে ২০২৩ সালের এক তথ্য অনুযায়ী (রেগুলেটরে বিভিন্ন ভাবে ও বিভিন্ন সময়ে বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী) প্রায় ৫০০কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে সরকারের। এই রেগুলেটরে পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৭৫৩.১৫ ঘনমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের

নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী জানান, স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় রেখেই এই ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হবে এব ভাঙনের পরিমান কমে যাবে বলে আশা এ কর্মকর্তা।তিনি বলেন, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পার মাধ্যমে ভাঙনের স্থায়ী সমাধান করার পরিকল্পনা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। প্রাথমিকভাবে আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এখানে ড্রেজিং করতেমেশিন চলতে যে তেল খরচ হবে শুধু মাত্র সে খরচ ধরা হয়েছে ।

জেলা প্রশাসক খন্দতার ইশতিয়াক আহমেদবলেন,‘রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার খবরে সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রেগুলেটর ভাঙার পর দ্রুত জোয়ারের পানি আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করছে। যা ওই অঞ্চলের জন্য ক্ষতিকর। স্থানীয়রা বলছে, যেহেতু দুইপাশে ভাঙছে তাই মাঝখানে একটি ড্রেজিং করলে ভাঙন কিছুটা কমবে। তাদের ওই পরামর্শের ভিত্তিতে এ ড্রেজিং এর কাজ চলমান রয়েছে। আপাতত ভাঙন রোধ করতে পারলে পরবর্তী সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে রেগুলেটরটি পুনঃনির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, মুছাপুরে প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। আমরা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে সেখানকার স্থানীয় মানুষজনের সাথে কথা বলেছি। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে স্লুইচগেট নির্মাণ এবং নদীভাঙ্গন রোধের বিষয়ে কথা বলেছি। ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে, আশা করি শীঘ্রই প্রকল্প অনুমোদনের মাধ্যমে স্লুইচগেট নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এ বিষয়ে আমরা

আবারো প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। জেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত মুছাপুরে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি-ঘর হারাচ্ছে শত-শত পরিবার। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় প্রবল পানির স্রোতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর স্লুইসগেট ভাঙনের কারনে এবং তা পূণঃনির্মান না হওয়ায় নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ঘর-বাড়ি এবং বিস্তীর্ণ ফসলী জমি। হুমকির মুখে পড়েছে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- নদীর তীব্র ভাঙনে মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের পুরো গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। আজ যেসব বাড়ী-ঘর, গাছপালা ও স্থাপনা দেখা যাচ্ছে সেটি আগামীকাল আর দেখা মিলছে না। এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে নদীর তীব্র ভাঙনকবলিত এই এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০০ বছরের পুরনো বাড়ীও উত্তাল নদীর আগ্রাসী ভাঙনে আজ বিলীন।

মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, পারিবারিক কবরস্থান, মক্তব ও জনতা বাজারের দোকান-পাট ও বাড়ী-ঘর বিলীন হয়ে গেছে। অনেকের মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনদের কবর দেয়া হয়েছিল বসতভিটার পাশে। নিজের পরিবার ও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিলেও নিতে পারছেন না স্বজনদের কবরগুলি। মা-বাবার শেষ স্মৃতি হিসেবে থাকা সেই কবরটি নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে।

চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানি ছল ছল করলেও বুকের মাঝে কান্না ধরে রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই নদীর তীব্র ভাঙন কবলিত এই এলাকার মানুষের। সহায় সম্বল হারিয়ে কেউ রাস্তার পাশে, কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এভাবে নদী ভাঙ্গায় ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শত-শত হেক্টর রোপা আমন ধানক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, কৃষকেরা মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন-রাত। অপর দিকে মুছাপুর রেগুলেটরে যাওয়ার প্রধান সড়কটির বেশীর ভাগ অংশ ভেঙে গেছে। বনবিভাগের সারি-সারি ঝাউগাছের বাগানটিরও

অনেক অংশ ভেংগে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। ইতি মধ্যে ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে শত-শত ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, গাছপালা ও মাছের ঘের। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও ফেনীরসোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। স্থানীয়রা জানায়, রেগুলেটর না থাকায় প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা পর পর দুই বার জোয়ার আসে। এসময় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর, চরহাজারী, চরপার্বতী ও ফেনীর সোনাগাজীর চরমজলিশপুর ও

চরদরবেশ ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামে। এতে প্রতিদিন ভাঙছে এসব ইউনিয়নের অনেক এলাকা গুলো। চলমান ভাঙনের কবলে ইউনিয়নগুলোর আরও কয়েকটি এলাকাও রয়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে আশপাশের মাছের প্রজেক্ট ও ফসলি জমিগুলোতে। যার ফলে বিপর্যয় ঘটছে মৎস্য ও কৃষিতে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে আমনের খেত, ভেসে গেছে অর্ধশত মাছের পুকুর ও প্রজেক্টের মাছ। লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় মারা যাচ্ছে মিঠা পানির মাছ।

নদী ভাঙনরোধ বন্ধ না হলে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজীর অনেক এলাকা বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিলীন হতে পারে ১ হাজার হেক্টর জমি, যেখানে চাষ হতো আমন, আউশ, বোরো, সরিষা, তরমুজ, ডাল, সূর্যমুখী, শাক-সবজি। সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কোটি কোটি টাকার কৃষি ও মৎস্য খাত।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, রেগুলেটর নদীতে বিলীন হওয়ার পর থেকে একের পর এক স্থাপনা, বাড়িঘর ও কৃষিজমি নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এ ভাঙন চলমান থাকলে কোম্পানীগঞ্জ ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দেশের মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন তারা।

তারা আরও বলেন, বন্যায় এমনিতেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। নদী ভাঙনের কারণে এখন ঘণ্টায় একটি করে পরিবার তাদের বাড়ি-ঘর হারাচ্ছে।ভেঙে যাচ্ছে মসজিদ, রাস্তা-ঘাট। নদী ভাঙন রোধে বাঁধ গুলো সোজা করা না হলে এখানকার অন্তত ১০০০পরিবার ভিটেমাটি সব হারাবে। আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের বাড়ি-ঘর, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজও রাস্তা-ঘাট বাঁচাতে চাই। নদী ভাঙন রোধ করতে ছোট ব্লক ও ছোট জিয়ো ব্যাগ ব্যবহার করা হলেও কাজের কাজ হচ্ছেনা। স্থানীয়রা জানায়, বড় ব্লক এবং বড়

জিয়োব্যাগ ফেলা হলে হয়তো নদী ভাঙন রোধ করা যেত। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রেগুলেটরে ভাঙন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ একর আমন ধানের জমি ও কয়েক একর শীতকালীন সবজির খেত নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এ ভাঙন যেভাবে অব্যাহত আছে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষি খাত।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফেনী থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত বন্যার পানির চাপে ভেঙে যায় রেগুলেটরটি। আর এতেই কপাল পুড়ে রোজিনাদের। রেগুলেটর ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণ পর নদীগর্ভে বিলীন হয় তার মাথা গোঁজার একমাত্র বসতঘরটি। নদী ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সঠিক তালিকা করে পুনর্বাসন করার দাবি জানান তিনি। মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুরের নদী ভাঙন রোধে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। যার ফলে গত ২৬আগস্টের পর থেকে বিলীন হয়েছে ওই জনপদের বড় একটি অংশ। ড্রেজিং শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে, তবে ড্রেজিং পরবর্তী আবারও রেগুলেটর স্থাপন করে স্থায়ী সমাধানের দাবি এলাকাবাসির।

সরকারের একাধিক উপদেষ্টা মুচাপুর রেগুলেটর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদী ভাঙন রোধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ছোট ফেনী নদীর জনতা বাজার অংশে ড্রেজিং কাজের শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে স্বস্তি ফিরেছে এ নদী তীরবর্তী ৪টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের মাঝে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহরাজ জানান, এ ড্রেজিং এর কাজের মাধ্যমে নদীর পানির প্রবাহ পরিবর্তনের পাশাপাশি মাঝ নদী দিয়ে পানি নামা শুরু করলে দুই পাশের আরও কয়েক লাখ মানুষের বসত ঘর রক্ষা হবে। একই সাথে ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পুনরায় আরও একটি রেগুলেটর স্থাপনের দাবি তাদের।

উল্লেখ্য, গত ২৬আগস্ট ফেনী থেকে নেমে আসা বন্যার পানির তীব্র চাপে ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর রেগুলেটর। তার আগে বন্যার পানি দ্রুত নামার জন্য খুলে দেওয়া হয় রেগুলেটরের ২৩টি গেট (ভেন্ট)। রেগুলেটরটি নদীর পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় পর থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। জোয়ার ভাটার প্রভাবে ভাঙতে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, মসজিদ, দোকান-পাট ও ফসলি জমি। এখনও প্রতিনিয়ত বিলিন

হচ্ছে আরও অনেক নতুন নতুন জায়গা। পানির স্রোতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ফেনীর দাগনভুঁইয়া, সোনাগাজী ও কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট উপজেলার মানুষের মাঝে দেখা দেয় আতঙ্ক। এখনো যাদের ঘর-বাড়ি টিকে আছে তারাও আতংকে দিন কাটাচ্ছেন এই বুঝি বসবাসের শেষ সম্বলটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হলো। প্রসংগত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, নতুন ডাকাতিয়া ও পুরাতন ডাকাতিয়া ছোট ফেনী নদী নিষ্কাশন প্রকল্পের অধীনে মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরে ২০০৬ সালে নোয়াখালী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একান্ত প্রচেষ্টায় তৎকালীন

প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রেগুলেটরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় ২০০৯ সালে শেষ করা হয় ২৩ ভেন্টের মুছাপুর রেগুলেটরের কাজ। ১.৩০ লাখ হেক্টর জমি রক্ষার্থে এ প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২.৩৫ কোটি টাকা। তবে ২০২৩ সালের এক তথ্য অনুযায়ী (রেগুলেটরে বিভিন্ন ভাবে ও বিভিন্ন সময়ে বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী) প্রায় ৫০০কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে সরকারের। এই রেগুলেটরে পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৭৫৩.১৫ ঘনমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী জানান, স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় রেখেই এই ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হবে এব ভাঙনের পরিমান কমে যাবে বলে আশা এ কর্মকর্তা।তিনি বলেন, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পার মাধ্যমে ভাঙনের স্থায়ী সমাধান করার পরিকল্পনা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। প্রাথমিকভাবে আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এখানে ড্রেজিং করতেমেশিন চলতে যে তেল খরচ হবে শুধু মাত্র সে খরচ ধরা হয়েছে ।জেলা প্রশাসক খন্দতার ইশতিয়াক আহমেদবলেন,‘রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার খবরে

সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রেগুলেটর ভাঙার পর দ্রুত জোয়ারের পানি আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করছে। যা ওই অঞ্চলের জন্য ক্ষতিকর। স্থানীয়রা বলছে, যেহেতু দুইপাশে ভাঙছে তাই মাঝখানে একটি ড্রেজিং করলে ভাঙন কিছুটা কমবে। তাদের ওই পরামর্শের ভিত্তিতে এ ড্রেজিং এর কাজ চলমান রয়েছে। আপাতত ভাঙন রোধ করতে পারলে পরবর্তী সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে রেগুলেটরটি পুনঃনির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, মুছাপুরে প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। আমরা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে সেখানকার স্থানীয় মানুষজনের সাথে কথা বলেছি। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে স্লুইচগেট নির্মাণ এবং নদীভাঙ্গন রোধের বিষয়ে কথা বলেছি। ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে, আশা করি শীঘ্রই প্রকল্প অনুমোদনের মাধ্যমে স্লুইচগেট নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

নোয়াখালীতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় তিন পরিবহন’র জরিমানা

0

নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালী থেকে ঢাকা রুটের যাত্রীদের বাসভাড়া ৫১ টাকা বেশি নেওয়ায় তিনটি পরিবহনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় আগের নির্দেশ অমান্য করায় দুই কাউন্টার ব্যবস্থাপককে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে মাইজদীর নতুন বাসস্ট্যান্ডের হিমাচল, লাল সবুজ ও একুশে পরিবহনের কাউন্টারে এই অভিযান চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনেওয়াজ তানভীর।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী-ঢাকা রুটে সরকার নির্ধারিত বাসভাড়া ৪৪৯ টাকা। কিন্তু পরিবহনের কাউন্টারগুলো ৫০০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ আসে। পরে অভিযানে গিয়ে এর সত্যতা পেয়ে ওই তিন পরিবহনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা এবং আগের নির্দেশ অমান্য করায় লাল সবুজ ও হিমাচল কাউন্টারে ব্যবস্থাপককে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হিমাচল এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপক শান্ত চন্দ্র দে এবং লাল সবুজ পরিবহনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনেওয়াজ তানভীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে পরিবহন মালিকদের যোগসাজশে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন নোয়াখালী জজকোর্টের আইনজীবী সামসুল ফারুক।

তিনি বলেন, ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি যাত্রী চলাচল করে। ভাড়া কমানোর দাবিতে আলটিমেটাম দিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিআরটিএ ও বাস মালিক সমিতিকে ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

অভিযানে নোয়াখালী বিআরটিএ কার্যালয় এবং ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তারা ছাড়াও আনসার সদস্যরা সহযোগিতা করেন। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহনেওয়াজ তানভীর।

মুছাপুরে স্লুইসগেট পূণনির্মান না হওয়ায় তিন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন

0

কোম্পানীগঞ্জ সংবাদাতা :

কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুরে স্লুইসগেট পূণনির্মান না হওয়ায় নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জ, সোনাগাজী ও দাগনভূঞার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা মুছাপুরে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি-ঘর। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় প্রবল পানির স্রোতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর স্লুইসগেট ভাঙনের কারনে এবং তা পূণঃনির্মান না হওয়ায় নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত হাজার হাজর ঘর-বাড়ি এবং বিস্তীর্ণ ফসলী জমি।

হুমকির মুখে পড়েছে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজী দাগনভূঞা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- নদীর তীব্র ভাঙনে মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের পুরো গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। আজ যেসব বাড়ী-ঘর, গাছপালা ও স্থাপনা দেখা যাচ্ছে সেটি আগামীকাল আর দেখা মিলছে না। এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে নদীর তীব্র ভাঙনকবলিত এই এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১শ বছরের পুরনো বাড়ীও উত্তাল নদীর আগ্রাসী ভাঙনে আজ বিলীন।

মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, পারিবারিক কবরস্থান, মক্তব ও জনতা বাজারের দোকান-পাট ও বাড়ী-ঘর বিলীন হয়ে গেছে। অনেকের মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনদের কবর দেয়া হয়েছিল বসতভিটার পাশে। নিজের পরিবার ও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিলেও নিতে পারছেন না স্বজনদের কবরগুলি। মা-বাবার শেষ স্মৃতি হিসেবে থাকা সেই কবরটি নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে।

চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানি ছল ছল করলেও বুকের মাঝে কান্না ধরে রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই নদীর তীব্র ভাঙন কবলিত এই এলাকার মানুষের। সহায় সম্বল হারিয়ে কেউ রাস্তার পাশে, কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এভাবে নদী ভাঙ্গায় ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শত-শত হেক্টর রোপা আমন ধানক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, কৃষকেরা মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন-রাত। অপর দিকে মুছাপুর রেগুলেটরে যাওয়ার প্রধান সড়কটির বেশীর ভাগ অংশ ভেঙে গেছে। বনবিভাগের সারি-সারি ঝাউগাছের বাগানটিরও

অনেক অংশ ভেংগে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, গাছপালা ও মাছের ঘের। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ, দাগনভূঞা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। স্থানীয়রা জানায়, রেগুলেটর না থাকায় প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা পর পর দুই বার জোয়ার আসে। এসময় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর, চরহাজারী, চরপার্বতী ও ফেনীর সোনাগাজীর চরমজলিশপুর ও চরদরবেশ ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামে। এতে প্রতিদিন ভাঙছে এসব ইউনিয়নের অনেক এলাকা গুলো। চলমান ভাঙনের কবলে ইউনিয়নগুলোর আরও কয়েকটি এলাকাও রয়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে আশপাশের মাছের প্রজেক্ট ও ফসলি জমিগুলোতে। যার ফলে বিপর্যয় ঘটছে মৎস্য ও কৃষিতে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে আমনের খেত, ভেসে গেছে অর্ধশত মাছের পুকুর ও প্রজেক্টের মাছ। লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় মারা যাচ্ছে মিঠা পানির মাছ।
নদী ভাঙনরোধ বন্ধ না হলে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজীর অনেক এলাকা বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিলীন হতে পারে ১ হাজার হেক্টর জমি, যেখানে চাষ হতো আমন, আউশ, বোরো, সরিষা, তরমুজ, ডাল, সূর্যমুখী, শাক-সবজি। সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কোটি কোটি টাকার কৃষি ও মৎস্য খাত।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, রেগুলেটর নদীতে বিলীন হওয়ার পর থেকে একের পর এক স্থাপনা, বাড়িঘর ও কৃষিজমি নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এ ভাঙন চলমান থাকলে কোম্পানীগঞ্জ ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দেশের মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন তারা।

তারা আরও বলেন, বন্যায় এমনিতেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। নদী ভাঙনের কারণে এখন ঘণ্টায় একটি করে পরিবার তাদের বাড়ি-ঘর হারাচ্ছে।ভেঙে যাচ্ছে মসজিদ, রাস্তা-ঘাট। নদী ভাঙন রোধে বাঁধ গুলো সোজা করা না হলে এখানকার অন্তত ১০০০পরিবার ভিটেমাটি সব হারাবে। আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের বাড়ি-ঘর, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজও রাস্তা-ঘাট বাঁচাতে চাই। নদী ভাঙন রোধ করতে ছোট ব্লক ও ছোট জিয়ো ব্যাগ ব্যবহার করা হলেও কাজের কাজ হচ্ছেনা। স্থানীয়রা জানায়, বড় ব্লক এবং বড়

জিয়োব্যাগ ফেলা হলে হয়তো নদী ভাঙন রোধ করা যেত। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রেগুলেটরে ভাঙন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ একর আমন ধানের জমি ও কয়েক একর শীতকালীন সবজির খেত নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এ ভাঙন যেভাবে অব্যাহত আছে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষি খাত।

মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোজিনা বেগম বলেন, গত ২০ বছর আগে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে গুচ্ছগ্রাম থেকে মুছাপুরে আসেন। স্বামী, মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে একটি দোচালা টিনের ঘর করে কাটছিল তার সংসার। মুছাপুর রেগুলেটরের পাশে থেকে মোকাবিলা করেছেন রিমাল, অসনি ও সিত্রাং-এর মতো কয়েকটি ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। কোনোটিতে নিজের ভিটে-মাটি ছাড়তে হয়নি রোজিনাকে।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফেনী থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত বন্যার পানির চাপে ভেঙে যায় রেগুলেটরটি। আর এতেই কপাল পুড়ে রোজিনাদের। রেগুলেটর ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণ পর নদীগর্ভে বিলীন হয় তার মাথা গোঁজার একমাত্র বসতঘরটি। নদী ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সঠিক তালিকা করে পুনর্বাসন করার দাবি জানান তিনি।

মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুরের নদী ভাঙন রোধে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। যার ফলে গত ২৬আগস্টের পর থেকে বিলীন হয়েছে ওই জনপদের বড় একটি অংশ। ড্রেজিং শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে, তবে ড্রেজিং পরবর্তী আবারও রেগুলেটর স্থাপন করে স্থায়ী সমাধানের দাবি এলাকাবাসির।

সরকারের একাধিক উপদেষ্টা মুচাপুর রেগুলেটর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদী ভাঙন রোধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ছোট ফেনী নদীর জনতা বাজার অংশে ড্রেজিং কাজের শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে স্বস্তি ফিরেছে এ নদী তীরবর্তী ৪টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের মাঝে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহরাজ জানান, এ ড্রেজিং এর কাজের মাধ্যমে নদীর পানির প্রবাহ পরিবর্তনের পাশাপাশি মাঝ নদী দিয়ে পানি নামা শুরু করলে দুই পাশের আরও কয়েক লাখ মানুষের বসত ঘর রক্ষা হবে। একই সাথে ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পুনরায় আরও একটি রেগুলেটর স্থাপনের দাবি তাদের।

উল্লেখ্য, গত ২৬আগস্ট ফেনী থেকে নেমে আসা বন্যার পানির তীব্র চাপে ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর রেগুলেটর। তার আগে বন্যার পানি দ্রুত নামার জন্য খুলে দেওয়া হয় রেগুলেটরের ২৩টি গেট (ভেন্ট)। রেগুলেটরটি নদীর পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় পর থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। জোয়ার ভাটার প্রভাবে ভাঙতে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, মসজিদ, দোকান-পাট ও ফসলি জমি। এখনও প্রতিনিয়ত বিলিন হচ্ছে আরও

অনেক নতুন নতুন জায়গা। পানির স্রোতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ফেনীর দাগনভুঁইয়া, সোনাগাজী ও কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট উপজেলার মানুষের মাঝে দেখা দেয় আতঙ্ক। এখনো যাদের ঘর-বাড়ি টিকে আছে তারাও আতংকে দিন কাটাচ্ছেন এই বুঝি বসবাসের শেষ সম্বলটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হলো। প্রসংগত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, নতুন ডাকাতিয়া ও পুরাতন ডাকাতিয়া ছোট ফেনী নদী নিষ্কাশন প্রকল্পের অধীনে মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরে ২০০৬ সালে

নোয়াখালী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একান্ত প্রচেষ্টায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রেগুলেটরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় ২০০৯ সালে শেষ করা হয় ২৩ ভেন্টের মুছাপুর রেগুলেটরের কাজ। ১.৩০ লাখ হেক্টর জমি রক্ষার্থে এ প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২.৩৫ কোটি টাকা। তবে ২০২৩ সালের এক তথ্য অনুযায়ী (রেগুলেটরে বিভিন্ন ভাবে ও বিভিন্ন সময়ে বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী) প্রায় ৫০০কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে সরকারের। এই রেগুলেটরে পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৭৫৩.১৫ ঘনমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের

নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী জানান, স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় রেখেই এই ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হবে এব ভাঙনের পরিমান কমে যাবে বলে আশা এ কর্মকর্তা।তিনি বলেন, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পার মাধ্যমে ভাঙনের স্থায়ী সমাধান করার পরিকল্পনা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। প্রাথমিকভাবে আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এখানে ড্রেজিং করতেমেশিন চলতে যে তেল খরচ হবে শুধু মাত্র সে খরচ ধরা হয়েছে ।

জেলা প্রশাসক খন্দতার ইশতিয়াক আহমেদবলেন,‘রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার খবরে সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রেগুলেটর ভাঙার পর দ্রুত জোয়ারের পানি আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করছে। যা ওই অঞ্চলের জন্য ক্ষতিকর। স্থানীয়রা বলছে, যেহেতু দুইপাশে ভাঙছে তাই মাঝখানে একটি ড্রেজিং করলে ভাঙন কিছুটা কমবে। তাদের ওই পরামর্শের ভিত্তিতে এ ড্রেজিং এর কাজ চলমান রয়েছে। আপাতত ভাঙন রোধ করতে পারলে পরবর্তী সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে রেগুলেটরটি পুনঃনির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, মুছাপুরে প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। আমরা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে সেখানকার স্থানীয় মানুষজনের সাথে কথা বলেছি। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে স্লুইচগেট নির্মাণ এবং নদীভাঙ্গন রোধের বিষয়ে কথা বলেছি। ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে, আশা করি শীঘ্রই প্রকল্প অনুমোদনের মাধ্যমে স্লুইচগেট নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এ বিষয়ে আমরা

আবারো প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। জেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত মুছাপুরে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ি-ঘর হারাচ্ছে শত-শত পরিবার। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় প্রবল পানির স্রোতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর স্লুইসগেট ভাঙনের কারনে এবং তা পূণঃনির্মান না হওয়ায় নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ঘর-বাড়ি এবং বিস্তীর্ণ ফসলী জমি। হুমকির মুখে পড়েছে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- নদীর তীব্র ভাঙনে মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের পুরো গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। আজ যেসব বাড়ী-ঘর, গাছপালা ও স্থাপনা দেখা যাচ্ছে সেটি আগামীকাল আর দেখা মিলছে না। এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে নদীর তীব্র ভাঙনকবলিত এই এলাকায়। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০০ বছরের পুরনো বাড়ীও উত্তাল নদীর আগ্রাসী ভাঙনে আজ বিলীন।

মুছাপুর ৭নং ওয়ার্ডের সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, পারিবারিক কবরস্থান, মক্তব ও জনতা বাজারের দোকান-পাট ও বাড়ী-ঘর বিলীন হয়ে গেছে। অনেকের মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনদের কবর দেয়া হয়েছিল বসতভিটার পাশে। নিজের পরিবার ও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিলেও নিতে পারছেন না স্বজনদের কবরগুলি। মা-বাবার শেষ স্মৃতি হিসেবে থাকা সেই কবরটি নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে।

চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানি ছল ছল করলেও বুকের মাঝে কান্না ধরে রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই নদীর তীব্র ভাঙন কবলিত এই এলাকার মানুষের। সহায় সম্বল হারিয়ে কেউ রাস্তার পাশে, কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এভাবে নদী ভাঙ্গায় ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শত-শত হেক্টর রোপা আমন ধানক্ষেত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, কৃষকেরা মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন-রাত। অপর দিকে মুছাপুর রেগুলেটরে যাওয়ার প্রধান সড়কটির বেশীর ভাগ অংশ ভেঙে গেছে। বনবিভাগের সারি-সারি ঝাউগাছের বাগানটিরও

অনেক অংশ ভেংগে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। ইতি মধ্যে ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে শত-শত ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, গাছপালা ও মাছের ঘের। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও ফেনীরসোনাগাজী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। স্থানীয়রা জানায়, রেগুলেটর না থাকায় প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা পর পর দুই বার জোয়ার আসে। এসময় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর, চরহাজারী, চরপার্বতী ও ফেনীর সোনাগাজীর চরমজলিশপুর ও

চরদরবেশ ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামে। এতে প্রতিদিন ভাঙছে এসব ইউনিয়নের অনেক এলাকা গুলো। চলমান ভাঙনের কবলে ইউনিয়নগুলোর আরও কয়েকটি এলাকাও রয়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ছে আশপাশের মাছের প্রজেক্ট ও ফসলি জমিগুলোতে। যার ফলে বিপর্যয় ঘটছে মৎস্য ও কৃষিতে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে আমনের খেত, ভেসে গেছে অর্ধশত মাছের পুকুর ও প্রজেক্টের মাছ। লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় মারা যাচ্ছে মিঠা পানির মাছ।

নদী ভাঙনরোধ বন্ধ না হলে কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাগাজীর অনেক এলাকা বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিলীন হতে পারে ১ হাজার হেক্টর জমি, যেখানে চাষ হতো আমন, আউশ, বোরো, সরিষা, তরমুজ, ডাল, সূর্যমুখী, শাক-সবজি। সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কোটি কোটি টাকার কৃষি ও মৎস্য খাত।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, রেগুলেটর নদীতে বিলীন হওয়ার পর থেকে একের পর এক স্থাপনা, বাড়িঘর ও কৃষিজমি নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এ ভাঙন চলমান থাকলে কোম্পানীগঞ্জ ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা দেশের মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন তারা।

তারা আরও বলেন, বন্যায় এমনিতেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। নদী ভাঙনের কারণে এখন ঘণ্টায় একটি করে পরিবার তাদের বাড়ি-ঘর হারাচ্ছে।ভেঙে যাচ্ছে মসজিদ, রাস্তা-ঘাট। নদী ভাঙন রোধে বাঁধ গুলো সোজা করা না হলে এখানকার অন্তত ১০০০পরিবার ভিটেমাটি সব হারাবে। আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের বাড়ি-ঘর, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজও রাস্তা-ঘাট বাঁচাতে চাই। নদী ভাঙন রোধ করতে ছোট ব্লক ও ছোট জিয়ো ব্যাগ ব্যবহার করা হলেও কাজের কাজ হচ্ছেনা। স্থানীয়রা জানায়, বড় ব্লক এবং বড়

জিয়োব্যাগ ফেলা হলে হয়তো নদী ভাঙন রোধ করা যেত। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রেগুলেটরে ভাঙন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ একর আমন ধানের জমি ও কয়েক একর শীতকালীন সবজির খেত নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এ ভাঙন যেভাবে অব্যাহত আছে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এতে সংকটে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষি খাত।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফেনী থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত বন্যার পানির চাপে ভেঙে যায় রেগুলেটরটি। আর এতেই কপাল পুড়ে রোজিনাদের। রেগুলেটর ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণ পর নদীগর্ভে বিলীন হয় তার মাথা গোঁজার একমাত্র বসতঘরটি। নদী ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সঠিক তালিকা করে পুনর্বাসন করার দাবি জানান তিনি। মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুরের নদী ভাঙন রোধে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। যার ফলে গত ২৬আগস্টের পর থেকে বিলীন হয়েছে ওই জনপদের বড় একটি অংশ। ড্রেজিং শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে, তবে ড্রেজিং পরবর্তী আবারও রেগুলেটর স্থাপন করে স্থায়ী সমাধানের দাবি এলাকাবাসির।

সরকারের একাধিক উপদেষ্টা মুচাপুর রেগুলেটর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নদী ভাঙন রোধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ছোট ফেনী নদীর জনতা বাজার অংশে ড্রেজিং কাজের শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে স্বস্তি ফিরেছে এ নদী তীরবর্তী ৪টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের মাঝে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহরাজ জানান, এ ড্রেজিং এর কাজের মাধ্যমে নদীর পানির প্রবাহ পরিবর্তনের পাশাপাশি মাঝ নদী দিয়ে পানি নামা শুরু করলে দুই পাশের আরও কয়েক লাখ মানুষের বসত ঘর রক্ষা হবে। একই সাথে ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পুনরায় আরও একটি রেগুলেটর স্থাপনের দাবি তাদের।

উল্লেখ্য, গত ২৬আগস্ট ফেনী থেকে নেমে আসা বন্যার পানির তীব্র চাপে ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর রেগুলেটর। তার আগে বন্যার পানি দ্রুত নামার জন্য খুলে দেওয়া হয় রেগুলেটরের ২৩টি গেট (ভেন্ট)। রেগুলেটরটি নদীর পানিতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় পর থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। জোয়ার ভাটার প্রভাবে ভাঙতে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, মসজিদ, দোকান-পাট ও ফসলি জমি। এখনও প্রতিনিয়ত বিলিন

হচ্ছে আরও অনেক নতুন নতুন জায়গা। পানির স্রোতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ফেনীর দাগনভুঁইয়া, সোনাগাজী ও কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট উপজেলার মানুষের মাঝে দেখা দেয় আতঙ্ক। এখনো যাদের ঘর-বাড়ি টিকে আছে তারাও আতংকে দিন কাটাচ্ছেন এই বুঝি বসবাসের শেষ সম্বলটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হলো। প্রসংগত, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, নতুন ডাকাতিয়া ও পুরাতন ডাকাতিয়া ছোট ফেনী নদী নিষ্কাশন প্রকল্পের অধীনে মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরে ২০০৬ সালে নোয়াখালী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একান্ত প্রচেষ্টায় তৎকালীন

প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রেগুলেটরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় ২০০৯ সালে শেষ করা হয় ২৩ ভেন্টের মুছাপুর রেগুলেটরের কাজ। ১.৩০ লাখ হেক্টর জমি রক্ষার্থে এ প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২.৩৫ কোটি টাকা। তবে ২০২৩ সালের এক তথ্য অনুযায়ী (রেগুলেটরে বিভিন্ন ভাবে ও বিভিন্ন সময়ে বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী) প্রায় ৫০০কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে সরকারের। এই রেগুলেটরে পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৭৫৩.১৫ ঘনমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী জানান, স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় রেখেই এই ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হবে এব ভাঙনের পরিমান কমে যাবে বলে আশা এ কর্মকর্তা।তিনি বলেন, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পার মাধ্যমে ভাঙনের স্থায়ী সমাধান করার পরিকল্পনা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। প্রাথমিকভাবে আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এখানে ড্রেজিং করতেমেশিন চলতে যে তেল খরচ হবে শুধু মাত্র সে খরচ ধরা হয়েছে ।জেলা প্রশাসক খন্দতার ইশতিয়াক আহমেদবলেন,‘রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ার খবরে

সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রেগুলেটর ভাঙার পর দ্রুত জোয়ারের পানি আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করছে। যা ওই অঞ্চলের জন্য ক্ষতিকর। স্থানীয়রা বলছে, যেহেতু দুইপাশে ভাঙছে তাই মাঝখানে একটি ড্রেজিং করলে ভাঙন কিছুটা কমবে। তাদের ওই পরামর্শের ভিত্তিতে এ ড্রেজিং এর কাজ চলমান রয়েছে। আপাতত ভাঙন রোধ করতে পারলে পরবর্তী সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে রেগুলেটরটি পুনঃনির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, মুছাপুরে প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। আমরা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে সেখানকার স্থানীয় মানুষজনের সাথে কথা বলেছি। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে স্লুইচগেট নির্মাণ এবং নদীভাঙ্গন রোধের বিষয়ে কথা বলেছি। ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে, আশা করি শীঘ্রই প্রকল্প অনুমোদনের মাধ্যমে স্লুইচগেট নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

নোয়াখালী সুবর্ণচরে ব্রি ১০৩ ধানের মাঠ দিবস

0

নোয়াখালী প্রতিনিধি ::নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উদ্ভাবিত ব্রি ধান১০৩ জাতের নমুনা শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমাবার (২৫ নভেম্বর) সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হারুন অর রশিদ সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রি সোনাগাজীর প্রধান ও সিএসও ড. আমিনুল ইসলাম।

এ ছাড়া এ মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন এসও সানিয়া তামান্না ও মো. নিবির হাসান । এতে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কৃষিবিদ ও সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার কৃষি কর্মকর্তা শিবব্রত ভৌমিক ।

মাঠ দিবস থেকে জানানো হয়, ব্রি ধান ১০৩ জাত গত আগস্ট মাসে বন্যা আক্রান্ত হওয়ার পরেও হেক্টরে ৬ দশমিক ৪ টন ফলন দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে সুবর্ণচর উপজেলার শতাধিক কৃষক-কৃষাণী অংশ নেয় এবং ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে ভারতীয় স্বর্ণা ধানের পরিবর্তে ব্রি ধান ১০৩ চাষাবাদের আশা ব্যক্ত করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, এ অঞ্চলে কৃষির উন্নয়নে কাজ করছি এবং করে যাব।তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, আপনারা সচেতন, উদ্যোগী, পারিশ্রমিক হলে অত্রাঞ্চলে কৃষির উন্নয়ন বিপ্লব হবে।

কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতা তোতা হত্যা মামলার প্রধান আসামী রাজ্জাক চেয়ারম্যান গ্রেফতার

0

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরএলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন তোতা হত্যা মামলার প্রধান আসামি চরএলাহী ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা।

রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে ঢাকার ভাটারা থানা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, গত ২৭ আগস্ট বিএনপি নেতা তোতাকে বেধড়ক কুপিয়ে আহত করার পর রাজ্জাক চেয়ারম্যান গা-ঢাকা দেয়। এরপর তিনি গোপনে ঢাকার ভাটারা থানা এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থাকদেন। রোববার বিকেলে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার এক বাসিন্দা রাজ্জাকের অবস্থানের বিষয়টি আঁচ করতে পারে। তাৎক্ষণিক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা তাকে ভাটারা থানা এলাকার অ্যাপার্টমেন্টের একটি কক্ষ থেকে আটক করে মারধর করে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।

এব্যাপারে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মামলা দেয়া হয়েছে এটি মিথ্যা ও সাজানো। আমি আশা করি আদালতে ন্যায় বিচার পাবো।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, বিএনপি নেতা তোতা হত্যা মামলার আসামি রাজ্জাককে ঢাকার ভাটারা থানা এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। খবর পেয়ে ভাটারা থানা পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশকে ভাটারা থানায় পাঠানো হয়েছে। আটক রাজ্জাককে তোতা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় আনা হয়েছে। এরপর আসামিকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ‘সার্চ কমিটি’তে সুুমন-তানিম-আদনান

0

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক :: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে চার সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে এক্সটারনাল এক্সপার্ট হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে লেখক এবং শিক্ষক সুমন রহমান, পরিচালক-প্রযোজক তানিম নুর এবং আদনান আল রাজীবকে। এছাড়াও কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামা।

এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা ও দেশের প্রখ্যাত নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেখানেই তিনি এমনটা জানান।

ফারুকী তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘লেখক এবং শিক্ষক সুমন রহমান, পরিচালক-প্রযোজক তানিম নুর এবং আদনান আল রাজীবকে এক্সটারনাল এক্সপার্ট হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে একটা সার্চ কমিটি করা হয়েছে আজকে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামা এই কমিটির সভাপতি হিসাবে থাকছেন।’

শিল্পকলায় আলাদা ‘চলচ্চিত্র’ বিভাগ চেয়ে ১৭৫ নাগরিকের বিবৃতি শিল্পকলায় আলাদা ‘চলচ্চিত্র’ বিভাগ চেয়ে ১৭৫ নাগরিকের বিবৃতি
তিনি আরও লেখেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের সাতটা প্রায়োরিটি প্রোগ্রামের একটা “রিমেম্বারিং মুনসুন রেভুলুশন”। এর একটা উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে ৮ বিভাগ জুড়ে প্রোডাকশন ওরিয়েন্টেড ফিল্মমেকিং ওয়ার্কশপ করা। যে ওয়ার্কশপগুলোর লক্ষ্য দুইটা-

১. প্রতি বিভাগে দশ জন করে প্রতিশ্রুতিশীল ফিল্মমেকারকে হাতে কলমে কাজ শেখানো। এই ওয়ার্কশপ পরিচালনা করবেন আটজন ফিল্মমেকার।

২. এই আট ফিল্মমেকার একই সাথে একটা করে ৪০ মিনিট দৈর্ঘের ছবি বানাবেন যে ছবিগুলো জুলাই মাসে রিমেম্বারিং মুনসুন রেভুলেশন ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষ্যে দেখানো হবে। পরবর্তীতে টেলিভিশন এবং অনলাইনেও দেখানো হবে এগুলো। এই ছবিগুলোতে সহকারী পরিচালক হিসাবে হাতেকলমে কাজ শেখার সুযোগ পাবেন ওয়ার্কশপে অংশগ্রহনকারীরা।

এই আটটা ওয়ার্কশপ কারা নিবেন এবং ভিজ্যুয়াল কনটেন্টগুলো কারা বানাবেন এটা নির্বাচন করার জন্য সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে। আট বিভাগের ভাই-বোনেরা, চোখ রাখুন ওয়ার্কশপের ঘোষণার জন্য। তার আগে চোখ রাখুন আপনার বিভাগে কে আসছেন জানতে। আশা করি সার্চ কমিটি দ্রুত বসে নির্বাচন সম্পন্ন করবেন।’

সবশেষে উপদেষ্টা লেখেন, ‘আমি তাকিয়ে আছি আজ থেকে পাঁচ বছর পরে যেন এটা শুনতে পাই কোন একজন ফিল্ম মেকার হয়তো এসে আমার সঙ্গে দেখা করে বলবেন- ভাই, আমি একটা ছবি বানিয়েছি। আপনারা যে একটা ওয়ার্কশপ করেছিলেন অমুক বিভাগে, আমি ওইটাতে পারটিসিপেট করেছিলাম। আমি বিশ্বাস করি যে ৮০ জন ওয়ার্কশপ পার্টিসিপেন্টকে নিয়ে ৮জন ফিল্মমেকার ওয়ার্কশপ করবেন, এই ৮০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন নিজেরা ফিল্মমেকার হয়ে দাঁড়াবেন। এই আগুনটাই আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই। পাশাপাশি এটাও চাই ৮ জন ফিল্মমেকার যে ৮ টা ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট বানাবেন সেই কন্টেন্টগুলো যেনো দেশে এবং দেশের বাইরে আমাদের সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসাবে বিবেচিত হয়। সবাইকে ধন্যবাদ। অনওয়ার্ডস এন্ড আপওয়ার্ডস।’

ভেসাল জাল বন্ধ করা না গেলে অচিরেই হারিয়ে যাবে দেশিয় প্রজাতির মাছ

0

নোয়াখালী সংবাদদাতা :: নোয়াখালীর সবগুলো খালে নিষিদ্ধ ভেসাল জাল বসিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে অসাধু চক্র। এতে নষ্ট হচ্ছে ডিম, রেনু ও মাছের পোনা, ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। খালের উপর বাঁশের বেড়া দিয়ে বাঁধ দিয়ে কিছুদূর পর পর বসানো হয়েছে নিষিদ্ধ ভেসাল জাল।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে জেলার সুবর্ণচর থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের মরা খালগুলোতে দুস্কৃতিকারীরা নিষিদ্ধ ভেসাল জাল বসিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। এ সকল খাল দিয়ে একযুগ পূর্বেও বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে বড় বড় চাম্পান নৌকা পণ্য নিয়ে আসতো।

নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘উন্মুক্ত জলাশয়ে নিষিদ্ধ ভেসাল জাল দিয়ে মাছ ধরা বেআইনি। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমরা অনেক নিষিদ্ধ ভেসাল জাল স্থাপনাসহ ধ্বংস করেছি এবং এ কার্যক্রম চলমান আছে। বৃহত্তর এ জেলার সুবর্ণচরের দক্ষিণের একসময়ের ঐতিহ্য হারানো মরা খালগুলোতে, বিবিরহাট এবং দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার শতাধিক এরূপ খালে ভেসাল জাল দিয়ে মাছ ধরা আইনি প্রক্রিয়ায় কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে তড়িৎ গতিতে মাছ ধরা বন্ধ না হলে অচিরেই এসব মাছ হারিয়ে যাবে চিরকালের মতো। এভাবে মাছ ধরা অব্যাহত থাকলে অচিরেই দেশিয় মাছ ঠাঁই পাবে ‘যাদুঘরে’।

ভেসাল জাল সাধারণত বর্ষাকালে বসানো হলেও সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ বন্যায় বিভিন্ন পুকুর ও খামারের মাছ মিশে যাওয়ায় সেই প্রবণতা বেড়েছে। নির্বিচারে মাছ ধরায় কৈ, শিং, পাবদা, মাগুর, পোয়া, টেংরা, পুটি, চিংড়ি, চান্দা, বাইন, মলা, ঢেলা, পাঙ্গাস, টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বংশ বিস্তারে ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাপ, ব্যাঙ, কুইচ্চাসহ হরেক প্রজাতির জলজ প্রাণি।

মৎস্য আইন ঠিকঠাক প্রয়োগ করে নিষিদ্ধ ভেসাল জাল বন্ধ করা না গেলে অচিরেই হারিয়ে যাবে দেশিয় প্রজাতির মাছ। তাই এলাকার মানুষের দাবি ঢিলেঢালা নয় নিয়মিতভাবে কঠোর অভিযান চালানো হোক।