নিউজ ডেস্ক :: খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০২০ উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ শুভেচ্ছা জানান।
নববর্ষ ২০২০ সবার জীবনে অনাবিল আনন্দ ও কল্যাণ বয়ে আনুক- এমন প্রত্যাশায় আবদুল হামিদ বলেন, ‘নববর্ষ সবার মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ- খ্রিষ্টীয় নববর্ষে এ প্রত্যাশা করি।’
তিনি বলেন, ‘২০২০ সাল আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে উদযাপিত হবে। এ জন্য গোটা দেশবাসী উন্মুখ হয়ে আছে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অতীতকে পেছনে ফেলে সময়ের চিরায়ত আবর্তনে খ্রিষ্টীয় নববর্ষ আমাদের মাঝে সমাগত। নতুনকে বরণ করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। তাই তো নববর্ষকে বরণ করতে বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন। খ্রিষ্টীয় নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত গোটা দেশ। বাংলা নববর্ষ আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকলেও ব্যবহারিক জীবনে খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জিকা বহুল ব্যবহৃত। খ্রিষ্টাব্দ তাই জাতীয় জীবনে প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে।’
নতুন বছরের অঙ্গীকার হোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা বিনির্মাণের পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২০ বাঙালি জাতির জন্য একটি বিশেষ গৌরবময় বছর। এ বছরই উদযাপিত হচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। আমরা ২০২০ খ্রিস্টাব্দকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছি। আগামী ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিনে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। তাই নতুন বছরের অঙ্গীকার হোক মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন স্বপ্ন আর সম্ভাবনা নিয়ে যাত্রা শুরু হচ্ছে নতুন বছরের। নতুন বছর অর্জন আর প্রাচুর্যে, সৃষ্টি আর কল্যাণে ভরে উঠুক এবং সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি- মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে এই প্রার্থনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘পুরাতনকে বিদায় দিয়ে নতুনকে আবাহন করা মানুষের সহজাত ধর্ম। অতীতের সফলতা-ব্যর্থতার ওপর দাঁড়িয়ে ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য এখন দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাওয়ার সময়। গত বছরের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে আমাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সামনে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ২০১৯ ছিল একটি উল্লেখযোগ্য বছর। এ সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশ্বের ৫টি দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। পূর্ববর্তী বছরের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে গত অর্থবছরে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। দেশে দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে।’
দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১৯০৯ মার্কিন ডলার দাঁড়িয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। শিক্ষার হার ৭৩ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায়। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ৭২ বছরের বেশি হয়েছে। আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নির্মূলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অব্যাহত রেখেছি। ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।’