সদর (নোয়াখালী) সংবাদদাতা :: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় দেলোয়ার বাহিনীর হাতে বিবস্ত্র অবস্থায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেছে আদালত। এরপর আদালত তার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে। সোমবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গুহ ২২ ধারায় নির্যাতিত গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
অন্যদিকে এ ঘটনায় নোয়াখালী থেকে গ্রেফতার হওয়া দুই আসামী মো. রহিম ও রহমত উল্লাহকে দুই মামলায় ৩ দিন করে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
আজ সোমবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগমগঞ্জ আদালতে হাজির করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাশফিকুল হক শুনানি শেষে ওই দুই আসামীর ৩ দিন করে প্রত্যেকের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জবানবন্দিতে নির্যাতিত গৃহবধূ জানান, তিনি এক ছেলে ও এক মেয়েসহ দুই সন্তানের জননী। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। দীর্ঘদিন স্বামীর সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর নির্যাতনের ঘটনার আরো এক মাস আগে তার মেয়ের বিয়ে হয়। মেয়ে তাকে অনুরোধ করে তারা যেন স্বামী-স্ত্রী দুইজনে বিরোধ মিটমাট করে একসাথে থাকেন। তিনি মেয়ের অনুরোধে স্বামীর সাথে যোগাযোগ করেন বিরোধ মীমাংসার জন্য।
ওই দিন (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পরে তার স্বামী তাদের বাড়িতে আসেন। এর একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে আকস্মিকভাবে তাদের উপর হামলা চালায়। একসময় হামলাকারীরা তার স্বামীকে বেঁধে রেখে ঘরের মধ্যে তাকে বিবস্ত্র করে বেদম মারধরসহ শারীরিক নির্যাতন করে। এসময় দুইজন পুরো ঘটনাটি মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও চিত্রধারণ করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
প্রসঙ্গত, রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ঘটনার ৩২দিন পর গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে, তা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এঘটনায় টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের।
ঘটনার পর থেকে গত ৩২ দিন অভিযুক্ত স্থানীয় দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবারকে কিছু দিন অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে তার পুরো পরিবারকে বসত বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করলে পুরো ঘটনা দীর্ঘদিন স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরে থাকে। পরে ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ ও র্যাব কয়েক দফায় অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামী-সহ এ পর্যন্ত ৪ অভিযুক্তকে আটক করেছে।