Home Blog Page 22

পৃথিবীর আলো দেখার আগে বাবার মৃত্যু সন্তানদের ভবিষ্যতে নিয়ে চিন্তিত হোসনে আরা

0

টাইম ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে নিহত আলমগীর হোসেন’র স্ত্রী আজও প্রিয় স্বামীর আলমগীর হোসেনের শেষ মুহূর্তের আবেগময় স্মৃতি আঁকড়ে ধরে আছেন হোসনে আরা আক্তার। স্বামীর সাথে তার হৃদয় বিদীর্ণ করা শেষ মুহূর্তগুলোর স্মৃতিচারণ করে বলেন,
ফুটফুটে নবজাতক আইরা মনির বয়স মাত্র দেড় মাস। শিশুটির পৃথিবীর আলো দেখার আগে আইরা মনি হারিয়েছেন তার বাবা আলমগীর হোসেনকে। এখন সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কেঁদে দিন কাটে স্ত্রী হোসনে আরার।
আলমগীর হোসেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের কাজিরখিল গ্রামের নুরু মিয়া সর্দার বাড়ির শাহজাহানের ছেলে।

জানা যায়, আলমগীর হোসেন ঢাকায় বাস চালিয়ে পরিবারের যাবতীয় খরচ যোগাতেন। ৫ আগস্ট উত্তরার রাজলক্ষ্মীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। তখন স্ত্রী হোসনে আরা ছিলেন সাত মাসের গর্ভবতী। এরপর থেকে তার সুখের পরিবারে অন্ধকার নেমে আসে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েন তিনি।

আলমগীর হোসেনের স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার বলেন, আমার স্বামী বাস চালিয়ে আমাদের সংসার চালাত। আমার দুই ছেলে। তার অনেক ইচ্ছা ছিল একটা মেয়ে সন্তানের। তার মৃত্যুর প্রায় দুই মাস পর ২৯ সেপ্টেম্বর মেয়ে পৃথিবীতে এসেছে ঠিকই কিন্তু তার বাবা তাকে দেখে যেতে পারল না। আমার মেয়েটা জন্মের আগেই এতিম হয়ে গেছে। ছেলেরা এখনো মনে করে তাদের বাবা বাড়ি আসবে। বড় ছেলে বলে তার বাবা সাইকেল নিয়ে আসবে কিন্তু আমি ত জানি, তাদের বাবা চিরদিনের জন্য চলে গেল।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন ৫ আগস্ট আমার স্বামীর বাস চালানোর ডিউটি ছিল না। তিনি উত্তরার খাল পাড়ের বাসায় ঘুমিয়ে ছিল। আমি তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলি। তিনি দুপুরে রাজলক্ষ্মীতে গিয়েছিল পরিস্থিতি দেখার জন্য। সেখানে পুলিশের গুলিতে মারা যায়। গুলিতে তার মাথার মগজ আলাদা হয়ে যায়। তার কবরে আলাদা পলিথিনে মগজসহ দাফন করা হয়েছে। আমার শ্বশুরের দুই সংসার। আমার স্বামী প্রথম সংসারের। শ্বশুর বয়স্ক মানুষ তিনি ঢাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখন অন্ধকার দেখছি। আল্লাহ জানে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে।
আলমগীর হোসেনের চাচি তাসলিমা আক্তার বলেন, আলমগীর আমাকে দেখলে মা বলে ডাকত। ছেলেটা মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে কষ্টে দিন পার করছে। আলমগীরের মৃত্যুর দুই মাসের মধ্যে তার স্ত্রীর কন্যা সন্তান হয়েছে। নবজাতক নিয়ে সে খুব কষ্টে আছে। বারবার অপারেশন করায় তার কোনো কাজ করার সুযোগও নেই।

সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরিন আকতার বলেন, আমি নতুন এসেছি। খবর পেয়ে আলমগীর হোসেনের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সরকারের কাছে আমরা তালিকা পাঠিয়েছি। বড় আকারের সরকারি সহায়তা তিনি পাবেন। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসন সব সময় তাদের পাশে থাকবে। আমি সব সময় খোঁজ খবর নেব।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, আমি যোগদানের পর বিভিন্ন উপজেলায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। শহীদ আলমগীর হোসেনের পরিবারের কথা জানা ছিল না। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছি। জেলা প্রশাসন সব সময় আলমগীরের পরিবারের পাশে থাকবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিষিদ্ধ ‘ছাত্রলীগের’ আদলে নতুন সংগঠনের গোপন’ আত্মপ্রকাশ

0

নিউজ ডেস্ক:
‘বাংলাদেশ মুক্তির ডাক ৭১’ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মান সমুন্নত রাখা, স্বাধীনতা ও সংবিধান সুরক্ষিত রাখা এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে।

গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী এলাকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আল রিয়াদ আদনান অন্তরের নেতৃত্বে এই সংগঠন যাত্রা শুরু করেছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে ‘গোপনীয়তার’ সঙ্গে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।

‘বাংলাদেশ মুক্তির ডাক ৭১’ সংগঠনটির ঘোষণাপত্র ও লক্ষ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এটি আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের আবরণে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। সংগঠনের মূল লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়েছে—বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সংবিধান, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সুরক্ষিত রাখা। মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানকে সমুন্নত রাখা।

‘বাংলাদেশ মুক্তির ডাক ৭১’ সংগঠনটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আল রিয়াদ আদনান অন্তর। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ঘোষণা অনুযায়ী, সংগঠনটির মহাসচিব খলিলুল্লাহ গাজী এবং মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবেন হুমায়ুন কবির জয়। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান অন্তরের রাজনৈতিক পরিচয় ও ঠিকানা পাওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

অন্তর টঙ্গী পূর্ব থানার এরশাদ নগরের ১ নম্বর ব্লকের ভান্ডারী গলির বাবুল মিয়ার ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগ টঙ্গীর ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি ছিলেন। ২০১৮ সালে ইয়াবাসহ টঙ্গীর কলেজগেট থেকে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। পরে র‍্যাব বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এরপর ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার হন আল রিয়াদ-আদনান অন্তর।

গত ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থাকার সুযোগে অন্তর কোথাও কোথাও নিজেকে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বাধীনতার প্রকৃত মূল্যবোধ পুনরুদ্ধার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের শক্ত হাতে প্রতিরোধ করাই নতুন এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন আল রিয়াদ আদনান অন্তর।

তিনি জানান, শুধু রাজনৈতিক কার্যক্রম নয় বরং সামাজিক উন্নয়ন এবং মানবিক কাজের মাধ্যমে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করবে সংগঠনটি। শিগগিরই মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র : বিডি২৪লাইভ

তুমি ক্যামেরার সামনে আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরবা নাকি!

0

বিনোদন ডেস্ক:
বলিউডের জনপ্রিয় তারকা দম্পতিদের মধ্যে রণভীর সিং এবং দীপিকা পাড়ুকোন অন্যতম। এই জুটি তাদের প্রথম সিনেমা ‘গোলিয়ন কি রাসলীলা: রাম লীলা’র শুটিং করার সময় ডেটিং শুরু করেছিলেন।
তার কয়েক বছর পর ২০১৮ সালে গাঁটছড়া বাধেন। তখন থেকেই ভক্তদের প্রিয় দম্পতি হয়ে উঠেন তারা।

সম্প্রতি একটি ইভেন্টে রণভীর পুরনো এক ঘটনা প্রকাশ করলেন। তিনি জানান, ওই সময় দীপিকাকে ক্যামেরার সামনে জড়িয়ে ধরায় রেগে গিয়েছিলেন তিনি।

রণভীর বলেন, ‘এটি ২০১৫ সালের ঘটনা। যখন আমরা একসঙ্গে ‘বাজিরাও মাস্তানি’ সিনেমার প্রচারণা করছিলাম। তখন আমি প্রথমবারের মতো দীপিকাকে ক্যামেরার সামনে জোরে জড়িয়ে ধরেছিলাম। দীপিকার প্রথম কথা ছিল, ‘তুমি ক্যামেরার সামনে আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরবা নাকি!’ খুব রেগে গিয়েছিল সে।’
গালি বয়’ অভিনেতা আরও বলেন, তার জীবনে সেরা প্রাপ্তি দীপিকা। তার সম্পর্কের বিস্ময়কর দিকটি হলো দীপিকা তাকে প্রতিনিয়ত বিস্মিত করে। কখনো রাগী কিংবা কখনো চিনির মতো মিষ্টি স্বভাবে।
রণভীরের ভাষায়, ‘আমার কাছে সে আমার প্রেমিকা, সেরা বন্ধু এবং সেরা বউ।

কপালে আমার ছেলের চুম্বনটা সারাক্ষণ অনুভব করি – শহীদ ইফাতের ‘মা’

0

নোয়াখালী প্রতিনিধি:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শহীদ ইফাতে হাসানের (১৬) মা আজও প্রিয় পুত্রের শেষ মুহূর্তের আবেগময় স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে আছেন।

মা কামরুন নাহার পুত্রের সাথে তার হৃদয় বিদীর্ণ করা শেষ মুহূর্তগুলোর স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমি আমার ছেলের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া মুহূর্তগুলো অনুভব করতে পারি… আমার ছেলে শেষবারের মতো চলে যাওয়ার আগে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছিলো, যা আমি সারাক্ষণ অনুভব করি।’  

ইফাতের মা ২০ জুলাই ছেলেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাওয়া থেকে বিরত করতে চেয়েছিলেন। ইফাত বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ছেলেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন যাতে ছেলে বাইরে না যায়। কিন্তু ইফাত নিজেও মাকে জড়িয়ে ধরেন। উদ্বিগ্ন মাকে রাজি করাতে মায়ের কপালে দু’বার চুম্বন করেন।

ইফাতের শোকাহত মা সেদিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন,  দুপুর সাড়ে ১২টায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগ মুহূর্তে ইফাত বলেছিলো, ‘তুমি আসলে আমাকে অনেক ভালোবাসো তাই তোমার এমন মনে হচ্ছে। চিন্তা করো না মা, আমি খুব বেশি দূরে যাব না, আমি শিগগিরই ফিরে আসব’।

যাত্রাবাড়ির দনিয়া এলাকার এ কে স্কুল এ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র ১৬ বছর বয়সী ইফাত সেদিন বিকেলেই বাড়ি ফিরেছিল, কিন্তু লাশ হয়ে। সেদিন যাত্রাবাড়ির শনির আখড়া এলাকায় পুলিশের গুলি বুকে বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শনির আখড়া এলাকায় আহত এক ব্যক্তিকে পার্শ্ববর্তী সালমান হাসপাতালে ভর্তি করাতে গিয়েছিলেন ইফাত। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার সময় পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।

‘আমার সুস্থ ছেলেটা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। যাবার সময় আমার কপালে দুটো চুমু দিয়ে গেল। কিন্তু আমি ভাবতে পারিনি, এটিই তার শেষ বিদায় হবে… আমি আমার কপালে তার চুম্বনের শেষ স্পর্শটুকু ভুলতে পারি না! আমি যখন জেগে থাকি তখন এই ছবিটিই আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে’ কামরুন নাহার ছেলের সাথে তার শেষ স্মৃতিটুকু স্মরণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সম্প্রতি যাত্রাবাড়ির কাজলা এলাকার রসুলপুরে তাদের ভাড়া বাসায় বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কামরুন বলেন, ‘আন্দোলনের শুরু থেকেই ইফাত ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্ম ছিলেন। ১৮ ও ১৯ জুলাইয়েও তিনি আন্দোলনে যোগ দেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইফাত যখনই বাইরে যেতো তখনই আমি আয়াতুল কুরসি (পবিত্র কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত) পড়ে তার মাথায় ফুঁ দিতাম। শুক্রবার সে যখন আন্দোলনে যাচ্ছিল তখনও আমি তার মাথায় ফুঁ দিয়েছিলাম।’

কামরুন নাহারের তিন সন্তানের মধ্যে ইফাতই একমাত্র ছেলে। তার বড় মেয়ে উম্মে সালমা ইফতি বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়েন। আর ছোট মেয়ে তাজরিয়া আলিমা (৫) এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি।

তার ব্যাংকার স্বামী রবিউল আমিন খন্দকার ২০২২ সালে মাত্র ৫০ বছর বয়সে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পুত্র ইফাতই মায়ের জীবনের একমাত্র অবলম্বন ছিল।

মৃত্যুর আগের দিন ১৯ জুলাই,  শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্দোলন থেকে বাসায় ফেরার পর ইফাত তার মায়ের কাছে রাস্তার পরিস্থিতি বর্ণনা করে বলেন, ওই দিন তার সামনে দুইটি ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

কামরুন নাহার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সে সময় আমি তাকে  অনুনয় করে বলেছিলাম, ‘তুমি আমার লক্ষ্মী   সোনা বাচ্চা, তুমি আর বাইরে যেও না। তুমি ছাড়া যে আমার কিছু নেই।’ কিন্তু তবুও আমি তাকে আন্দোলনে যাওয়া থেকে বিরত করতে পারিনি।

তিনি আরো জানান, ইফাত কখনই তাকে না জানিয়ে বাড়ির বাইরে যাননি। কারণ তিনি জানতেন যে তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে যখনই তিনি মায়ের চোখের আড়াল হন তখনই তার মা অস্থির হয়ে পড়েন।

তিনি যখন তাকে আন্দোলনে যোগ দিতে বাধা দিতেন, তখন ইফাত তাকে বলতেন,  ‘দেশ যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার অবসান ঘটাতে অনেক বাবা-মায়ের সন্তানই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে’।

ইফাত বলতেন, ‘আমরা যদি সবাই ঘরে বসে থাকি, তাহলে আন্দোলন সফল হবে না, বরং দেশ অচল হয়ে পড়বে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা ছাত্র এবং শিশুসহ অনেক লোককে হত্যা করছে।’

তিনি বলেন, ইফাত অবশ্য তাকে বলতেন যে তিনি পরের দিন থেকে আন্দোলনে যাবেন না, কিন্তু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পরের দিনটি আর তাদের জীবনে আসেনি।

সন্তানদের পড়ালেখা ও ভরণ- পোষণ চালিয়ে নিতে তার সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে কামরুন নাহার বলেন, ইফাতের চাচা ও মামাসহ আত্মীয়-স্বজনরা তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ইফাত ছিল আমার একমাত্র ছেলে। তাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। তারা কীভাবে আমার নিষ্পাপ ছেলের বুকে গুলি চালাতে পারলো?’

২০ জুলাই ইফাত বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার মন খুব অস্থির ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুপুর ২টা বা আড়াইটার দিকে, আমি দুটি গুলির শব্দ শুনে সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম এবং আমার বড় মেয়েকে বলেছিলাম, গুলিটা মনে হয় আমার বুকে এসে লাগলো।’

তারপরই তিনি তার মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ইফাত কোথায়? সে এখনো ফেরে না কেন?’

ইফাতের মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘যখন আমি ইফাতের কথা ভেবে উদ্ভ্রান্তের মতো এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাচ্ছিলাম, তখন আমাদের আগের ভাড়া বাড়ির মালিক ফোনে আমার মেয়েকে জানায় যে ইফাতকে পুলিশ গুলি করেছে এবং তাকে সালমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

সে সময় তার বড় মেয়ে উম্মে সালমা তাকে জানান, ইফাতের পায়ে সামান্য আঘাত লেগে থাকতে পারে।

কামরুন নাহার অশ্রুরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা নিচে নামার আগেই দেখলাম ইফাতের বন্ধুরা তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ ইফাতের লাশ ছিনিয়ে নিতে চাইলে তার সহযোদ্ধারা বাধা দিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সালমান হাসপাতালের ব্যবস্থাপক সুরভি সোহানা বাসসকে বলেন, ইফাতকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু যেহেতু কেউ তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি, তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইফাতের একটি ছবি তুলে বিক্ষোভকারীদের কাছে পাঠায়। তিনি বলেন, তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর বিক্ষোভাকারীদের সহায়তায় তার লাশটি বাড়ি পাঠানো হয়। সালমান হাসপাতালটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন শনির আখড়া বাস স্টপেজের কাছে অবস্থিত। ১৬ জুলাই  মো. আবু সাঈদসহ আরো ৬ জন বিক্ষোভকারী শহীদ হওয়ার পর ১৭ জুলাই থেকে এলাকাটি রীতিমতো একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়।

আন্দোলনের সময় সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় বিশৃঙ্খলার কোনো প্রমাণ তাদের কাছে আছে কি না জানতে চাইলে সোহানা বলেন, বিক্ষোভ চলাকালে যাত্রাবাড়ি থানার পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক জব্দ করে নিয়ে গেছে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ায় পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও হয়রানি করেছে।

তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভের সময় প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি মৃতদেহ তাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে  আনা হয়। তবে আহতের সংখ্যা ছিল অগণিত।’

ইফাতের মা বলেন, ইফাতের নিষ্পাপ লাশ হাসপাতালে পড়ে থাকতে দেখে চিকিৎসকরা তার প্রতি সহানুভূতিশীল হন। তারা পুলিশের নজরদারি এড়িয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন একটি সরু গলি দিয়ে তার লাশ বের করে দেন।

ক্রন্দনরত মা কামরুন নাহার আরো বলেন, ‘আমি সৌভাগ্যবান যে সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে, আমি আমার প্রিয় সন্তানের মরদেহ দেখতে পেয়েছি,  যখন অনেক লোক তাদের কাছের এবং প্রিয়জনের লাশ খুঁজে পায়নি।’ 

আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘তবে, আমি এখনও আমার মনকে বোঝাতে পারি না। আমার কেবলই মনে হয়, আমি নিজে কেন তার পিছনে পিছনে যাইনি? আমি যদি তার সাথে সাথে থাকতাম তবে সে হয়ত রাস্তায় যেত না।’

তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইফাতের স্বপ্ন ছিল বড় প্রকৌশলী হওয়ার।  সে অত্যন্ত মেধাবী ও পড়ালেখায় মনোযোগী ছিল। আর তার শখ ছিল ক্রিকেট খেলা।

নোবিপ্রবিতে গার্মেন্টস চ্যারিটি সেল এর স্টলসমূহ পরিদর্শন করেন উপ- উপাচার্য

0

নোয়াখালী প্রতিনিধি :: নোবিপ্রবিতে গার্মেন্টস চ্যারিটি সেল এর স্টলসমূহ পরিদর্শন করেন নোবিপ্রবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক।

‘মানবতার জন্য মানুষ’ সংগঠন আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম সংলগ্ন মাঠে রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে এমেলা পরিদর্শন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ তামজীদ হোছাইন চৌধুরী (চলতি দায়িত্ব), সংগঠনের প্রতিনিধি ও নোবিপ্রবি কর্মকর্তাবৃন্দ।

কোম্পানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বের জেরে যুবদলনেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

0

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বের জেরে সাবেক যুবদল নেতা এরশাদ মাঝিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা। নিহতের অপর তিন ভাইকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছ গ্রাম ঘাট এলাকায় (ডাকাতিয়া নদী) এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে চট্রগ্রাম নেয়ার পথে রাত ১০ টায় তার মৃত্যু হয়। নিহত এরশাদ’র ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর জন্য উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাঞ্ছুরুল হক বাবরের ক্যাডারদের দায়ী করেছে নিহতের পরিবার।

নিহত এরশাদ মাঝি চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামের রইছল হকের ছেলে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন এরশাদের ছোটভাই জহির উদ্দিন (৩৩), নিজাম উদ্দিন (২৮) ও ফরহাদ (২৪)। তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতের আরেক ছোটভাই সামছুদ্দিন (৩০) জানান, সকালে গুচ্ছগ্রাম ঘাটে লিজ নেওয়া ভিটায় দোকানঘর নির্মাণ করতে যান এরশাদ মাঝি। এ সময় চাঁদা দাবির পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জলদস্যু নিজাম ডাকাতের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য সমীর, জাবেদ, ওবায়েদ, জিয়া, সুজন, তারেকসহ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়।

নিহতের বাবা রইছল হক বলেন, হামলায় নিজাম ডাকাতের ছেলে সন্ত্রাসী সুজন আমার ছেলে এরশাদের পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। অপর আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার আরও তিন ছেলেকে জখম করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাঞ্ছুরুল হক বাবর বামনী নদী ও সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাছ ধরার প্রতিটি ট্রলার থেকে নিজাম ডাকাতের বাহিনী দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। নিহত এরশাদের মাছ ধরার ট্রলার থাকায় তার থেকেও ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে পাঁচ হাজার টাকা দিলেও বাকি টাকা না দেওয়ায় নিজাম ডাকাত ও তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়।

নিহতের ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেন দাবি করেন, মুছাপুর বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান ও তার ছোটভাই মাঞ্ছুরুল হক বাবরের সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা না পেয়ে যুবদল নেতা এরশাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আসামিরা সবাই বাবর বাহিনীর সদস্য। তিনি (বাবর) এদের দিয়ে নদীতে চাঁদাবাজি করান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান ও তার ভাই মাঞ্ছুরুল হক বাবর নদীতে চাঁদাবাজি এবং হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে না পেরে উপজেলা বিএনপির এক নেতা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় নির্বাচন কবে জানালেন ড. ইউনূস

0

টাইম ডেস্ক :

জাতীয়: সংস্কার শেষে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নির্ভর করছে সংস্কারের গতির ওপর। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের ‍গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করতে হবে। আমরা দ্রুত নির্বাচন দিতে চাই।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ ২৯ সম্মেলনের ফাঁকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম দেশকে ভোটের জন্য প্রস্তত করতে। প্রস্তুতি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচন দেওয়া হবে।

সরকার দ্রুত নির্বাচন দিতে চায় জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, সংস্কার কাজে দেশের সবাইকে এক হতে হবে। সরকার, সংসদ, নির্বাচনী বিধি কেমন হবে, এসব খুব দ্রুত শেষ করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যতই কম হয় ততই ভালো এমন মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারে আছি। তাই আমাদের মেয়াদ যতটা সম্ভব কম হওয়া উচিত। আমরা দ্রুত নির্বাচন দিতে চাই।

দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিতিশীলতার বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, যেকোনো সরকারই এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন থাকবে। তার সরকারও আছে। আমরা আশা করছি যে, এটি সমাধান করতে পারব এবং একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পারব।

ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন সংস্কার কাজে হাত দিয়েছে। বিএনপিসহ বেশ কিছু দল যতটুকু সম্ভব সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।

কিছুদিন আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন হলে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হবে।

এরপর জাতিসংঘ সদর দফতরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভার সঙ্গে বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, চলমান সংস্কার কাজ শেষে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকার কাজ সম্পন্ন হলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সূত্র : ঢাকামেইল

কোম্পানীগঞ্জে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করেছে হেলমেট পরিহিত দুর্বৃত্তরা

0

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নে নাজমুল হাসান রনি (৩৫) নামে এক যুবলীগের নেতাকে কুপিয়ে জখম করেছে হেলমেট পরিহিত দুর্বৃত্তরা।

বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের শাখায়াতের দোকানের পাশে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত নাজমুল হাসান রনি উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা মো.আনিস মিয়ার ছেলে। তিনি চরকাঁকড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ছিলেন।

নাজমুল হাসান রনির ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন পিংকু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার ভাই দোকানের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় মটরসাইকেলে আসা হেলমেট পরিহিত একদল দুর্বৃত্ত রনির ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় তারা রনিকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়।

পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় রনিকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় ।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

সাংস্কৃতিক উপদেষ্টাসহ দুই উপদেষ্টাকে অপসারণে আইনি নোটিশ

0

টাইম ডেস্ক:

অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন দুই উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিজেকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদনও জানান ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মো. সফিকুল ইসলাম সবুজ খান।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি। নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে ফারুকী ও বশিরের পদত্যাগ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। তা না হলে আইনজীবী মো. সফিকুল ইসলাম সবুজ খান উচ্চ আদালতে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 

নোটিশে বলা হয়েছে, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। বিগত ১৬ বছর পর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যার নায়ক খুনি শেখ হাসিনার পতনের পর সাধারণ ছাত্র-জনতা ও দেশবাসী একটি সুন্দর সরকার চেয়েছিল। সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে একটি ক্লিন ইমেজ ও সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করবেন। 

কিন্তু আমরা দেখছি, ফ্যাসিস্ট সরকারের উপাদান বিদ্যমান এমন ব্যক্তিদের উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। বিতর্কিত ও খুনি হাসিনার সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের উপদেষ্টা করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নোবেলজয়ী ব্যক্তির উপদেষ্টা মণ্ডলীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও তার স্ত্রী তিশা বিগত স্বৈরাচার সরকারের আশির্বাদপুষ্ট হয়ে অনেক সুবিধার ভাগীদার হয়ে আজকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিজয়ের ভাগ নিতে চায়। এছাড়া অন্য উপদেষ্টা বশির উদ্দিন খুনি শেখ হাসিনার নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার ৪৯ নম্বর এফআইআরভুক্ত অন্যতম আসামি এবং আওয়ামী সরকারের এমপির ভাই বিতর্কিত ও বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সুবিধাভোগী মুজিববাদ আদর্শের অনুসারীদের উপদেষ্টামণ্ডলী থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাই।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, জুলাইয়ের বিপ্লবের নিহত ও আহত শহীদ ছাত্র-জনতার তাজা রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার সুবিধাভোগী বিতর্কিত ও ছাত্র হত্যার আসামিদের উপদেষ্টামণ্ডলীতে দেখতে চায় না। 

স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার পতনের আন্দোলনে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে গত ১৭ বছর নানা নির্যাতন হামলা মামলার স্বীকার হয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২৬ দিন গুলির মুখে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদ বিদায় করার গর্বিত অংশীদার হিসেবে আমাকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানাই।

নোবিপ্রবির ছাত্রী হলে আগুন পরীক্ষা স্থগিত

0

নোবিপ্রবির প্রতিনিধি ::নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বিবি খাদিজা আবাসিক ছাত্রীদের হলে অগ্নিকাণ্ড,প্রভোস্ট ড. মামুন অর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৩টায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, বিবি খাদিজা হলের ৩০৬ নম্বর রুমে শর্ট সার্কিটের কারণে নিচতলার পেছনের সিঁড়ির পাশে অবস্থিত বৈদ্যুতিক মিটার বক্সে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে বৈদ্যুতিক মিটার বক্সটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ ঘটনায় আতঙ্কিত ছাত্রীরা দ্রুত হল থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে তারা সুস্থ হয়ে হলে অবস্থান করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন,আমাদের হলগুলোতে খাবারের মান যথেষ্ট উন্নত না হওয়ায় আমাদেরকে বাধ্য হয়ে রান্না করতে হয়। রান্না কাজে ইলেকট্রিক চুলা ব্যবহার হওয়ায় এই ঘটনা ঘটতে পারে।এছাড়াও আমাদের হলটি পুরাতন হওয়ায় তারগুলো তুলনামূলক দুর্বল হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা অধিক হওয়ায় ব্যবহার বেড়ে গেছে। তাই হলের সকল লাইনগুলো নতুন করে সংস্কার করা উচিৎ।

অপর আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, হলের রুমগুলোতে শিক্ষার্থীরা বৈদ্যুতিক ওভেন, হিটার, ইন্ডাকশন কুকারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম ব্যবহার করেন। অননুমোদিত এসব ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন সময় নোবিপ্রবির হলগুলোতে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট হচ্ছে।

ফারজানা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় নিচতলার পেছনের সিঁড়িযুক্ত বৈদ্যুতিক মিটার বক্স আগুনে জ্বলছে। পরে ছাত্ররা এসে আগুন নিভিয়েছে। ৩০৭ ও ৩০৬ নং রুমে গিয়ে ব্যাপক ধোঁয়া দেখা যায়। ভোর ৪টার পর ফায়ার সার্ভিস যখন এসেছে আগুন তখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। আগুনের ঘটনায় হল ছেড়ে বের হওয়ার সময় দুজন পায়ে আঘাত পেয়েছেন।

বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট ড. মামুন অর রশিদ বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আহত দুই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা শেষে হলে রাখা হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগ সচল রাখতে কাজ করছে। আশা করি দ্রুতই আমরা সংযোগ সচল করতে পারব। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও হল প্রশাসন সঙ্গে বসে হলে একটি মিটিং সম্পন্ন করেছি। সকলের মতামত নেয়া হয়েছে যে বিষয়গুলো সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে আমরা  দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। যেহেতু শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়েছে তাই সব বিভাগের চলমান টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাগুলো অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত পরীক্ষাগুলোর সময়সূচি পরে জানানো হবে। বিদ্যুৎ সংযোগ সচল রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করছে